বিধানসভায় ফের বেনজির বিশৃঙ্খলা, গোটা অধিবেশনে সাসপেন্ড ৪ বিজেপি বিধায়ক
প্রতিদিন | ২৩ জুন ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সপ্তাহের প্রথম দিন বিধানসভা অধিবেশন শুরু হতেই ফের বেনজির বিশৃঙ্খলা। বিধানসভার কাজে বাধা দেওয়া, কাগজ ছেঁড়ার মতো অসংসদীয় কাজে লিপ্ত হলেন বিজেপি বিধায়করা।যার জেরে চার বিধায়ক ? শংকর ঘোষ, মনোজ ওঁরাও, দীপক বর্মন ও অগ্নিমিত্রা পলকে গোটা অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে দিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমতো মার্শাল ডেকে তাঁদের অধিবেশন কক্ষের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। বাইরে বেরিয়ে ফের অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। কেউ কেউ বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়েন। এসব অশান্তির মধ্যে বিল নিয়ে আলোচনার শুরুর নির্দেশে দেন স্পিকার।
এদিন বিজেপি বিধায়কদের মার্শাল ডেকে বের করায় বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ে। যদিও সাসপেন্ড হওয়ার পর অগ্নিমিত্রা পল, দীপক বর্মন নিজেরাই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর পরিস্থিতি আরও চরমে ওঠে। অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় মার্শালের কলার ধরে ধাক্কা দেন। আরেক বিধায়ক মিহির গোস্বামীও চেপে ধরেন মার্শালকে। নিরাপত্তারক্ষীরা পালটা বলপ্রয়োগ করে সবাইকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারপরও অবশ্য বেশ কয়েকজন অধিবেশনে ছিলেন। তাঁরা ওয়েলে নেমে স্লোগান তুলতে থাকেন। এদিন প্রশ্নোত্তর পর্ব হওয়ার কথা থাকলেও তা বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে অধিবেশনে নেতাজি সুভাষ ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয় স্পিকারের নির্দেশে। সেসময় অধিবেশন বয়কট করে বিজেপি।
এরপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাতে কিছু নিয়ে একাই অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। স্পিকারকে টুকরো কিছু দেখান। তাতে আলোচনা থেমে যায়। ক্ষুব্ধ স্পিকার স্পষ্ট বিরোধী দলনেতাকে বলেন, ”এইভাবে আপনি সভার কাজ বন্ধ করতে পারেন না।” শুভেন্দু দাবি করেন, বাইরে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্রর ঘড়ি ছিঁড়ে টুকরো হয়েছে, ভেঙে গিয়েছে শংকর ঘোষের চশমাও। স্পিকার বলেন, ”এসব বাইরে গিয়ে প্রেসকে দেখান। এটা পাড়ার রক না। বাইরে গিয়ে বলুন।”
তারপরও বিরোধী দলনেতা দাঁড়িয়েছিলেন স্পিকারের টেবিলের সামনেই। সেসময় উলটোদিকের বেঞ্চ থেকে অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসুরা অভিযোগ করেন, বিজেপি তাঁদের ডেস্ক ভেঙে দিয়েছে। স্পিকার তা শুনে স্পষ্ট জানান, যারা একাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। এরপর তিনি নির্দেশ দেন, বিধানসভার মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়ার। বলেন, ”এটা তামাশার জায়গা নয়।” সেইসঙ্গে স্পিকার এও বলেন, ”স্পিকার শেষে বলেন বিজেপির তরফেও অভিযোগ যা যা এসেছে সেগুলো তদন্ত করে সিদ্ধান্ত জানাব।”