ডিএ নিয়ে রাজ্যকে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। হাতে আর মাত্র চারদিন বাকি। এবার সরকারি কর্মীরা তাকিয়ে রয়েছেন নবান্নের দিকে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পর রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেই অপেক্ষায় তাঁরা।
ডিএ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মোট ১১ হাজার ৮৯০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ডিএ বকেয়া রয়েছে। আর ১১ হাজার ৬১১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা মোট বকেয়া রয়েছে পেনশন প্রাপকদের। এ ছাড়া ১৮ হাজার ৩৬৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে পুরসভা, পঞ্চায়েত–সহ স্বশাসিত সংস্থা ও রাজ্য সরকার পরিচালিত সংস্থার কর্মীদের। সব মিলিয়ে বকেয়া অর্থের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে এর ২৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ২৭ জুনের মধ্যে মেটাতেই হবে। যদিও এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতে শুনানির সময় রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানিয়েছিলেন, পুরো ডিএ এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা করতে গেলে রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা বেহাল হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে দেশের শীর্ষ আদালত ডিএ সংক্রান্ত মামলায় নির্দেশ দিয়েছিল, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ ডিএ বকেয়া রয়েছে, তার ২৫ শতাংশ রাজ্য সরকারকে মিটিয়ে দিতে হবে। আগামী ২৭ জুন সেই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। কিন্তু ২৭ জুন, শুক্রবার আবার রথযাত্রার কারণে রাজ্যে সরকারি ছুটি। পরের দুই দিন শনি ও রবিবারও সরকারি ছুটি। এখন এই ছুটি শুরু হওয়ার আগেই রাজ্য সরকার মহার্ঘ ভাতা নিয়ে কোনও ঘোষণা করে কিনা, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। তাঁরা মনে করছেন, চলতি সপ্তাহে ছুটি শুরু হওয়ার আগেই নবান্ন ডিএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারে।
ডিএ নিয়ে মূল মামলাকারী কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে না পারে, তা হলে তাঁরা আগামী শনিবার ই-মেল মারফত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি পাঠাবেন। সেই চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হবে, যেহেতু রাজ্য সরকার আদালতের দেওয়া নির্দেশ মানেনি, তাই আগামী সাত দিনের মধ্যে ডিএ দেওয়া নিয়ে নবান্ন কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে তারা আদালত অবমাননার মামলা করবে।