কৌশিক দে, মালদা
মন খারাপ মালদার আম চাষিদের। এ বারও বাংলাদেশে আম পাঠাতে পারলেন না তাঁরা। অতিরিক্ত করের চাপে গত ১৩ বছর ধরে রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে। অভিযোগ, মালদার সুস্বাদু এবং বিখ্যাত আম বাংলাদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনও রকম উদ্যোগ গ্রহণ করছে না কেন্দ্রীয় সরকার।
মালদা ম্যাঙ্গো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘সার্ক অন্তর্ভুক্ত যে ক’টি দেশ রয়েছে, চুক্তি মতো কোনও পণ্যের আমদানি কর ইচ্ছেমতো বাড়ানো যাবে না।
কিন্তু বাংলাদেশ এক কেজি আমের উপরে ১১৩ টাকা শুল্ক চাপিয়েছে। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব দিয়ে লোকসান করে আম পাঠানো কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সেই কারণে মালদার আম বাংলাদেশের রপ্তানি হওয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে।’
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। জেলার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এই আম চাষ, উৎপাদন এবং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
এ বছর প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি আম উৎপাদন হয়েছে। ইতিমধ্যে গোপালভোগ, হিমসাগর, মধুচুসকি, মিশ্রিকান্ত সহ আরও বেশ কিছু জলদি জাতের আম গাছ থেকে পাড়ার কাজ শেষ হয়েছে।
এখনও ফজলি, ল্যাংড়া, জিলাপিগাড়া, আম্রপালি সহ আরও বেশ কিছু জাতের আম গাছে রয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে সেগুলি পাড়ার কাজ শুরু হবে।
ইংরেজবাজার ব্লকের অমৃতি গ্রামের আম চাষি আমিনুদ্দিন শেখ বলেন, ‘একটা সময়ে আমাদের দশ বিঘা বাগানের আম রপ্তানি কারকেরা বাংলাদেশের পাঠানোর জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখত। দু’টো বেশি পয়সা হতো।
এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে আম যায় না। ওই দেশের সরকার আম আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য-কর অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন আর বাংলাদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখান না ব্যবসায়ীরা।’
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উত্তম বসাক বলেন, ‘মালদার আম ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বাংলাদেশে মালদার আম যায় না। কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি দেখলে এখানকার চাষিরা লাভবান হবে।’