এই সময়, কালনা: রবিবার সকালে কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় বজ্রাঘাতের বলি হলেন তিন জন, জখম এক। এঁরা চাষের কাজে ও গোরু চরাতে মাঠে ছিলেন। কালনা শহরে বজ্রপাতের ফলে একটি বাড়ির বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ক্ষতি হয়। সাময়িক ভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েন দু’জন। এমন ভয়াবহ বজ্রপাতের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ।
কালনা শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকারীপাড়ার বাসিন্দা, সীমা দাস নামে এক মহিলা এ দিন সকালে বাড়ির বাইরে কাপড় কাচছিলেন। সেই সময়ে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল, হাল্কা বৃষ্টিও পড়ছিল। সেই সময়েই আচমকা বজ্রপাত হয়।
বাজ পড়ার পরে সাময়িক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই মহিলা। বজ্রপাতের কমবেশি প্রভাব পড়ে লাগোয়া আরও তিন–চারটি বাড়িতে। গৃহকর্তা অজয় দাস বলেন, ‘আমি সেই সময়ে বাইরে কাজে ছিলাম।
বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলে অর্ঘ্য দাস ছিল। খবর পেয়ে ছুটে যাই বাড়িতে। বাড়ির রেফ্রিজারেটর, দু’টি ফ্যান, কেবল লাইন, বাড়ির সমস্ত সুইচ বোর্ডের ক্ষতি হয়েছে।’
বজ্রপাতের পরে কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও আতঙ্কের ঘোর কাটাতে পারেননি ওই মহিলা। তিনি বলেন, ‘মনে হলো, আমার গায়ের কাছ দিয়েই যেন আগুনের গোলার মতো কিছু একটা চলে গেল। তার সঙ্গে বিকট আওয়াজ। বাজ পড়ার পরে বেশ কিছুক্ষণ কানে শুনতেও পাচ্ছিলাম না।’
ওই মহিলা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও বজ্রপাতে এ দিন প্রাণ গিয়েছে তিন জনের। কালনা মহকুমার নাদনঘাটের বড় কড়াইলে মাঠে চাষের কাজ করার সময়ে মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলদীপ সাঁতরা (২৩) নামে এক যুবকের।
তিনি দাদুশ্বশুর নিমাই রায়ের সঙ্গে চাষের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বাজ পড়লে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। জখম হন নিমাই। তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে।
পরে নিমাই বলেন, ‘আমি এবং মঙ্গলদীপ পাটের আঁটি বাঁধছিলাম। আচমকা বাজ পড়ায় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। হাত–পা কেমন যেন অবশ হয়ে যায়। এখন খানিকটা সুস্থবোধ করছি।’
মন্তেশ্বরের খাঁদরায় মাঠে চাষের কাজ করার সময়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় হারু দাস (৪৮) নামে এক ব্যক্তির। তাঁর ছেলে নিতাই দাস বলেন, ‘বাবা জমিতে চাষের কাজ করছিলেন, সেই সময়েই বাজ পড়ে।’
হারুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করে। এ দিন আবার মন্তেশ্বরের মরাইপিঁড়ি এলাকায় মাঠে গোরু চরানোর সময়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। তাঁর নাম হরগোবিন্দ বিশ্বাস (৬৪)। তাঁকে পরে মন্তেশ্বর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।