এই সময়: ‘অনসেট’-এর কয়েক দিন পরেই ‘ব্রেক’। বিরতির কয়েকটা দিন মোটের উপর ছেদ বৃষ্টিতে। কিন্তু পার পরেই ফের শক্তি সঞ্চয় করে ‘বার্স্ট’। এমন ভাবেই চলতে থাকে বাংলায় বর্ষার মরশুম। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হলো না।
২৯ মে উত্তরবঙ্গে ঢুকেছিল দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাস। সেটাই ছিল এ বছর বাংলায় বর্ষার ‘অনসেট’। উত্তরে টানা কয়েক দিন বৃষ্টির পর সাময়িক ভাবে শক্তি হারিয়েছিল বর্ষার বাতাস।
সেই ‘ব্রেক’–এর পর ফের শক্তি বাড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি নেমেছিল ১৭ জুন। তার তিন দিন পর ফের ‘ব্রেক’। তবে এ বার নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের পর দক্ষিণবঙ্গে ফের ‘মনসুন বার্স্ট’ হতে পারে। সৌজন্যে বঙ্গোপসাগরে নতুন করে একটি ওয়েদার সিস্টেম তৈরির সম্ভাবনা।
বঙ্গোপসাগরে ফের তৈরি হতে চলেছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। এই সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়েই সমুদ্রে ওই ওয়েদার সিস্টেম জন্ম নিতে চলেছে। সময়ের সঙ্গে ঘূর্ণাবর্তটির শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আর এই ‘ওয়েদার সিস্টেম’–এর প্রভাবেই দক্ষিণবঙ্গের সাময়িক ভাবে ঝিমিয়ে পড়া বর্ষা নতুন উৎসাহে গা–ঝাড়া দিতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলছেন, ‘বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাসের প্রবাহ কোনও নিরবচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
টানা কয়েকদিন জলীয় বাষ্পের বাহক এই বাতাস ঢুকে আসার পরে হঠাৎই কয়েক দিনের বিরতি নেয়। ওই সময়ে মৌসুমি অক্ষরেখা দক্ষিণবঙ্গ থেকে কিছুটা উত্তরে সরে যায়। সমুদ্রে নতুন করে কোনও ‘ওয়েদার সিস্টেম’ তৈরি হলে আবার মৌসুমি বাতাস সক্রিয় হয়।’
এই কারণেই ১৭ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের প্রাথমিক প্রবাহটি দুর্বল হওয়ার পর কিছুটা ছেদ পড়েছিল বৃষ্টিতে। তবে বৃষ্টি কমলেও মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির আবহ বজায় ছিল পুরোমাত্রায়।
এর কারণ সদ্য দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যাওয়া সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি। ওই নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলোয় রবিবার সকালেও বৃষ্টি হয়েছে।
আপাতত মনে করা হচ্ছে আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে বৃষ্টি শুরু হবে। বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির প্রকোপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। বৃষ্টির পাশাপাশি থাকছে বজ্রবিদ্যুতের পূর্বাভাসও।
মাত্র কয়েক দিন আগেই দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে যে সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গিয়েছে, তার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
এই সপ্তাহে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলে দামোদর, বরাকর, মুণ্ডেশ্বরীতে ফের জলস্তর বাড়তে শুরু করার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, হুগলির আরামবাগ ও গোঘাটের মতো এলাকার অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।