• কালীগঞ্জ কার? ফল আজ, আশায় তৃণমূল
    বর্তমান | ২৩ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: আজ সোমবার, কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল। ৩ জন প্রার্থীর ভাগ্য গণনা হবে। ত্রিমুখী লড়াই হবে নাকি, মেরুকরণের প্রভাব পড়বে, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। নির্বাচনী প্রচারে অবশ্য তৃণমূল ও বিজেপিকে সম্মুখ সমরে নেমেছিল।‌ বাম-কংগ্রেস জোটও    শেষের দিকে ভালোই ফাইট দিয়েছে।  তবে, জনতা জনার্দ্দন কোন দিকে  খেলা ঘুরিয়েছে, সেটা বোঝা যাবে ইভিএম খুললেই। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই কালীগঞ্জের এই উপনির্বাচন। অনেকেই বলছেন, সব দলের কাছে এটি অ্যাসিড টেস্ট।  ফলে গোটা রাজ্যবাসী তাকিয়ে রয়েছে কালীগঞ্জের দিকে। এই উপনির্বাচনের ফলাফল থেকেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে নানা মহল। 

    এদিকে, কালীগঞ্জের এই উপনির্বাচনে শাসকদল তৃণমূল চাইছে অতীতের রেকর্ড ভেঙে দিতে। অন্যদিকে, বিরোধী শিবির কত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিরোধী শিবির ধরে রাখতে পারবে তো? সেই প্রশ্নই উঠছে নানা মহলে। বিশেষকরে লোকসভা নির্বাচনে বামেদের পাওয়া ভোট উপনির্বাচনে কতটা হেরফের হচ্ছে, সেই দিকেও নজর রয়েছে সকলের। সোমবার সকালে পানিঘাটা উমাদাস হাইস্কুলের ইভিএম খোলার পর তা পরিস্কার হবে। রবিবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, গণনার দিন পর্যবেক্ষকরা এবং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবে। গণনা নিয়ে আমরা একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছি।

    সোমবার সকাল আটটা থেকে ১৬টি টেবিলে ২৩ রাউন্ডে গণনা হবে। তিন দলের ৫১ জন এজেন্ট কেন্দ্রে সামিল হবে। সেইসঙ্গে গণনা কেন্দ্রে থাকবে তিন দলের প্রার্থীও। নিরাপত্তা চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গণনাকেন্দ্রের চত্বর। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেইসঙ্গে থাকছে রাজ্যে পুলিসও। প্রায় ৫৫০ জন পুলিস ফোর্স গণনা কেন্দ্রের আশপাশে মোতায়েন করা হচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার উত্তম ঘোষ বলেন, সর্বত্রই পুলিসি নিরাপত্তা শক্তিশালী করা হয়েছে। গণনাকেন্দ্র ও তার সংলগ্ন এলাকাতেও পুলিস পিকেটিং থাকবে। 

    ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কালীগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূলের প্রায় ৩৩ হাজার লিড ছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এই কেন্দ্রে প্রায় ৪৬ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিল। তাই এই দুই মার্জিনকে উপনির্বাচনে ছাপিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য তৃণমূলের। 

    ভোট গ্রহণের দিন কমিশনের তথ্য বলছে, কালীগঞ্জ বিধানসভার হিন্দু অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় ভোট পোল অনেকটাই কম হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভোট পোল ভালো হয়েছে। যা শাসকদলকে  বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। কারণ, এই কেন্দ্রে প্রায় ৬০ শতাংশ  মুসলিম ভোট রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে মেরুকরণের হাওয়ায় বিজেপি প্রায় ৬৪ হাজার ভোট পেয়েছিল। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস প্রায় ৩৭ হাজার ভোট পায়। যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করে, এর পিছনে তৃণমূলের ‘তরমুজ’ নেতাদের অবদান রয়েছে। তবে, উপনির্বাচনের রাজনৈতিক প্রচারে দেখা যায়, বিজেপি হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে একত্রিত করতেই বেশি তৎপর। প্রচারেও তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। 

    বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী কাবিল উদ্দিন শেখ বলেন, বিজেপি রাজ্য নেতারা এসে মুসলিম মানুষদের উদ্দেশ্যে নেতিবাচক কথা বলেছে। নির্বাচনকে মেরুকরণ করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। যাতে ভোটে সুবিধা পায় তৃণমূল। 

    তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ বলেন, নির্বাচনী প্রচারে মানুষের মধ্যে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। আশা করছি, ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন ঘটবে। । রেকর্ড মার্জিনে জয় আমাদের নিশ্চিত।  বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ বলেন, আমরা আমাদের জয় নিয়ে আশাবাদী। হিন্দু এলাকায় ভোট পোল ভালো হয়েছে। ভোট বাক্সে লড়াই হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)