নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: চার বছরের শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠেছে সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে খানাকুল থানার জগন্নাথপুর গ্রামে। পুলিস জানিয়েছে, মৃত শিশুর নাম কৃষ্ণ কোলে। ইতিমধ্যেই পুলিস অভিযুক্ত সৎ মা সোমা কোলেকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস ও পরিবারের দাবি, ওইদিন ঘটনার সময় বাড়িতে অভিযুক্ত মহিলা তার নিজের শিশুপুত্র সৎ ছেলে কৃষ্ণকে নিয়ে ঘরেই ছিল। ফলে, শিশুপুত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই মহিলার উপরেই। মৃত শিশুর দাদুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস প্রথমে সৎ মা-কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিস জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মা খুনের কথা স্বীকার করেছে। তার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুগলি গ্রামীণ পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, দুই শিশুর মধ্যে কোনও ঝামেলা হচ্ছিল। সেইসময় অভিযুক্ত মহিলা সৎ ছেলেকে মারধর করে। পরে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে ব্ল্যাঙ্কেট ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অনুমান। ধৃত মহিলাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জগন্নাথপুরের বাসিন্দা স্বর্ণেন্দু কোলে সুরাতে সোনার কাজ করেন। বিগত প্রায় ১০ বছর ধরেই সেখানেই কাজ করেন। কায়বা গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়েছিল। তাঁদেরই সন্তান কৃষ্ণ। কিন্তু, বছর কয়েক আগে স্বর্ণেন্দুবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর ঘাটালের সোমা দাসকে বিয়ে করেন স্বর্ণেন্দুবাবু। সোমারও আগে বিয়ে হয়েছিল। তার দুই সন্তান রয়েছে। তারমধ্যে এক সন্তানকে নিয়ে সে স্বর্ণেন্দুবাবুর সংসারে আসে। আর এক সন্তানকে বাপেরবাড়িতে রেখে আসে। বাড়িতে স্বর্ণেন্দুবাবুর মা-ও থাকেন। কিন্তু, ওইদিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
এদিন সুরাত থেকে ফোনে স্বর্ণেন্দুবাবু বলেন, অমি বাইরে রয়েছি বলে সারাক্ষণ ভিডিও কলে কৃষ্ণ সহ সবাইকে দেখতাম। শনিবার দুপুর পর্যন্ত তাদের দেখেছি। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ফোন করলে স্ত্রী বলে কৃষ্ণ ঘুম থেকে কিছুতেই উঠছে না। তারপর আমি আত্মীয়দের বিষয়টি জানায়। এরপর তাদের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর খবর পাই। ওখানে কী ঘটনা ঘটেছে জানি না। তবে যদি স্ত্রী দোষী হয় তাহলে তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
পরিবারের এক আত্মীয় তন্ময় মণ্ডল বলেন, ভাইয়ের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ওর বাড়িতে গিয়ে দেখি এই ঘটনা। তখন কৃষ্ণ মারা গিয়েছে। শরীরে পিঁপড়ে ঘুরছিল। কীভাবে ঘটনা ঘটেছে তা বুঝতে পারিনি। তবে ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে ওই মহিলা ও দুই শিশু ছাড়া বাড়িতে আর কেউ ছিল না। তাই আমরা চায় পুলিস ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। মৃত শিশু। -নিজস্ব চিত্র