সুবর্ণরেখার গ্রাসে নয়াগ্রামের কৃষি জমি, নদী এগচ্ছে জনবসতির দিকে
বর্তমান | ২৩ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামে সুবর্ণরেখা নদীর জলস্তর বেড়েছে। যার জেরে ডুবে গিয়েছে নয়াগ্ৰাম ব্লকের নদী তীরবর্তী কৃষিজমি। শুকদেবপুর থেকে যাদবপুর দেড় কিমি নদী পাড়ে ধ্বস নামছে। নদী ভাঙনে জমির সঙ্গে শুকদেবপুর গ্ৰাম সহ বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গ্ৰামবাসীরা পাড় বাঁধানোর দাবিতে সরব হচ্ছেন। ঝাড়গ্রামে সুবর্ণরেখা ও কংসাবতী নদী তীরবর্তী একাধিক জায়গায় পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। বিনপুর-১ ব্লকের বৈতা এলাকায় পাড় বাঁধানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। বর্ষার পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে সুবর্ণরেখা ও কংসাবতী নদীর পাড় বাঁধানোর জন্য ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। নয়াগ্ৰামের শুকদেবপুর এলাকায় পাড় বাঁধানো হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বিধায়ক থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা ভাঙন নিয়ে উদ্বিগ্ন। বহু চাষির জমি ইতিমধ্যেই নদীর গ্ৰাসে চলে গিয়েছে। এবার বসতি এলাকাও নদীর গ্ৰাসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের গালুডি ও চান্ডিল ড্যাম থেকে জল ছাড়লে সুবর্ণরেখায় জল বাড়ে। পাড় ভাঙোনের জেরে গ্ৰামবাসীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। শুকদেবপুরে বাসিন্দা আনন্দ রাউত এদিন বলেন, সুবর্ণরেখায় জল বাড়ায় নদী তীরবর্তী কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। নদী জনবসতির দিকে এগিয়ে আসছে। আগেই পাঁচ বিঘার মতো জমি নদীর গ্ৰাসে চলে গিয়েছে। পাড় না বাঁধলে বাকি জমিও থাকবে না। অপর চাষি অনিল মহাপাত্র বলেন, পাড় না বাঁধালে সামনের দিনে এই গ্ৰামটার আর অস্তিত্ব থাকবে না। গতকাল বিধায়ক ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তাঁদের কাছে পাড় বাঁধানোর দাবি জানানো হয়েছে। কলমাপুকুরিয়ার বাসিন্দা সনাতন সরেন বলেন, জমিতে এখনও জল জমে আছে। জমির ফসল আর বাঁচানো যাবে। জমি নদীর গ্ৰাসে চলে গেলে পথে বসতে হবে। নরসিংহপুর এলাকার চাষি ভানু ঘোষ বলেন, অনেকটা জমিই নদীর গ্ৰাসে চলে গিয়েছে। বাকি জমিটুকু থাকবে কিনা জানি না। যাদবপুর গ্ৰামের চাষি উৎপল দণ্ডপাট বলেন, আমার জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। বীজতলা হয়ে গিয়েছিল। বেগুন, ভেন্ডি গাছ বড় হয়ে গিয়েছিদ । সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাড় না বাঁধলে বহু মানুষ এবার ভিটেমাটি হারাবে।
নয়াগ্ৰাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপা বেরা বলেন, জলের স্রোতে শুকদেবপুর থেকে যাদবপুর পর্যন্ত দেড় কিমি নদীর পাড় ভাঙছে। নদীর গ্ৰাসে এলাকার বহু মানুষের কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। গত কয়েকদিনে নদীর পাড় যেভাবে ভাঙা শুরু হয়েছে তা উদ্বেগজনক। প্রশাসনের উচ্চস্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নয়াগ্ৰামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু বলেন, নদী তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেছি। এই এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে নদীর পাড় বাঁধানো দরকার। জেলা প্রশাসন ও সেচদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানানো হবে।-নিজস্ব চিত্র