সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: আমদানি-রপ্তানি পরিবহণ করের এজেন্ট থেকে বড় মাপের শিল্পপতি। যোগ আন্তর্জাতিক সুপারি পাচার চক্রেও। অবশেষে শনিবার নকশালবাড়িতে গ্রেপ্তার বাগডোগরার নামী ব্যবসায়ী ধীরাজ ঘোষ। একসময় বাগডোগরার গোঁসাইপুর চেকপোস্টে আমদানি-রপ্তানি পরিবহণ করের এজেন্ট ছিলেন ধীরাজ। বর্তমানে বাগডোগরা তথা উত্তরবঙ্গেরই অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী। সূত্রের খবর, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে আট মাস আগে কর চুরির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। শেষে আন্তর্জাতিক সুপারি পাচারকাণ্ডে গ্রেপ্তার হলেন ধীরাজ।
তবে ঘটনার আট মাস পর শিল্পপতির গ্রেপ্তারে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। এজন্য তারা সিবিআই তদন্তের জোরালো দাবি জানিয়েছে। গত অক্টোবরে শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় পাঁচটি সুপারি বোঝাই লরি সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিস। তার মধ্যে একটি সুপারি বোঝাই লরি নকশালবাড়ি থানার পুলিস ধরেছিল। জেলা পুলিসের তদন্তে বাগডোগরার বাসিন্দা ধীরাজের নাম উঠে আসে। এজন্য পুলিস চুরি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মতো সাতটি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে।
বিজেপির এক নেতা বলেন, সেল ট্যাক্স, জিএসটি ফাঁকি দিয়ে এজেন্ট থেকে কোটিপতি ব্যবসায়ী। জমির কারবার, পরিবহণ ব্যবসার আড়ালে মায়ানমার থেকে উত্তর ভারতে সুপারি পাচার। নিজ এলাকায় দান করে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখতেন।
এদিকে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিসের হাত থেকে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার জোরালো দাবি তুলেছেন মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক বিজেপির আনন্দময় বর্মন। তিনি বলেন, এর আগে আমাদের দলের রাজ্য সভাপতি ওই শিল্পপতির কুকীর্তি জনসম্মুখে তুলে ধরেছিলেন। তাঁর কয়েকশো কোটি টাকার জমি দুর্নীতি, মায়ানমার থেকে সুপারি পাচার, জিএসটি ফাঁকি ও জিএসটির ভুয়ো রিসিভ তৈরি করার মতো অভিযোগ নিয়ে রাজ্য সভাপতি সরব হয়েছিলেন। কিন্তু এতদিন পর হলেও পুলিস ধরেছে। সিবিআই তদন্ত হলেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তা না হলে কয়েকশো কোটি টাকার দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে যেতে বেশি সময় লাগবে না।
আনন্দময় যোগ করেন, ধীরাজ ঘোষের জিএসটি অফিসার স্ত্রীকেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা দরকার। পাশাপাশি ধীরাজের মতো শিলিগুড়িতে আরও অনেক রয়েছে। তাদেরকেও ধরা উচিত।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের অরুণ ঘোষ বলেন, তৃণমূলের নেতারা দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে গ্রেপ্তার হবেন। বিধায়কের নাম জানা থাকলে তা বলুন। অবৈধ কাজে যারা জড়িত থাকবে, পুলিস প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। ধীরাজকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিস। - নিজস্ব চিত্র।