ভরদুপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি লুট করে পালানোর সময় পাকড়াও ২
বর্তমান | ২৩ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ভরদুপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি। তাও আবার শিলিগুড়ির প্রাণকেন্দ্র হিলকার্ট রোডে। বুধবার রাতে এটিএম লুটের ঘটনার পর রবিবারের এই ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ছুটির দুপুরে হিলকার্ট রোডের ওই অভিজাত জুয়েলারির দোকানে সাধারণ ক্রেতা সেজেই ঢুকেছিলেন এক মহিলা। সঙ্গে দুই পুরুষও ছিলেন। আর পাঁচজনের মতো তাদেরও নানা অলঙ্কার দেখাচ্ছিলেন দোকানের কর্মচারীরা। এদিকে, তখন দোকানের বাইরে অপেক্ষা করছিল আরও তিনজন। আচমকা দোকানের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করে ভিতরে ঢুকে পড়ে সশস্ত্র তিন দুষ্কৃতী। বন্দুক দেখিয়ে সব কর্মীকে বেঁধে, তাঁদের ফোন কেড়ে নেয় ডাকাতরা। ততক্ষণে ক্রেতার ভেকধারী মহিলা ও তার দুই পুরুষ সঙ্গীও ‘অ্যাকশনে’ নামে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে অপারেশন চালায় তারা। শো-কেসে সাজানো সোনা, রুপো, হীরের সমস্ত অলঙ্কার ব্যাগে ভরে। এরপর দুষ্কৃতীরা দোকানে কোলাপসিবল গেটে বাইরে থেকে তালা মেরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে বাইক চালিয়ে চম্পট দেয়।
যদিও পালানোর সময় প্রথমে হাসমিচকে ট্রাফিক পুলিস কর্মী দিলীপ সরকারের তৎপরতায় এক দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। পরে আরও এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে খালপাড়া ফাঁড়ির পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ শফিক ও মহম্মদ শফির। তাদের বাড়ি বিহারে। ধৃতদের হেফাজত থেকে পুলিস দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও কয়েক রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করেছে। মিলেছে সোনার অলঙ্কারও। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিসের ধারণা, দুষ্কৃতীরা সম্ভবত বিহার থেকেই এসেছিল।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, মেয়র গৌতম দেব ঘটনাস্থলে পৌঁছন। বিধায়ক শহরের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা নিয়ে পুলিসের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন। এ ব্যাপারে মেয়র বলেন, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিস নিজের কাজ করছে। আশা করছি,বাকি অপরাধীদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিনের ঘটনায় ব্যবসায়ী মহলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হিলকার্ট রোড ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সনৎ ভৌমিক বলেন, এই ধরনের ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। আমরা চাই, পুলিস দ্রুত তদন্ত করে বাকি দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করুক।
সোনার দোকানের সিকিউরিটি গার্ড রক্ষিত দেবনাথ বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা আমাকে মারধর করা শুরু করে। আমাকে টেনে হিঁচড়ে শোরুমের ভিতরে নিয়ে গিয়ে হাত বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখায়। আমার হাত-পা কাঁপছিল। কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। দোকান মালিক প্রদীপ কর্মকারের কথায়, পুলিসকে ডাকাতির ঘটনা সব জানিয়েছি। কত টাকার অলঙ্কার নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা তার হিসাব করে পুলিসকে জানাব। নিজস্ব চিত্র