ইংলিশবাজার পুরসভার বিরুদ্ধে ‘কর বিক্ষোভ’, পাল্টা কৃষ্ণেন্দুর
বর্তমান | ২৩ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা মালদহ: ইংলিশবাজার পুরসভার জঞ্জাল কর নিয়ে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা মালদহের বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের। পাল্টা বণিকসভাকে তুলোধোনা করেছেন ইংলিশবাজার পুরচেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। ‘জঞ্জাল কর’ নয় বরং বর্জ্য নিষ্কাশনের ‘সার্ভিস ট্যাক্স’ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। অন্যদিকে, রবিবার সকাল থেকে জঞ্জাল কর আদায়ের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করতে রাস্তায় নেমে পড়েছে সিপিএম। বিষয়টি নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপিও। সবমিলিয়ে জঞ্জাল কর অথবা সার্ভিস ট্যাক্স নিয়ে চাপে ইংলিশবাজার পুরসভা। যা নিয়ে শোরগোল শহরে।
ইংলিশবাজার পুরসভা সম্প্রতি জঞ্জাল পরিসেবা চার্জ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এতেই জোরালো আপত্তি তুলেছে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স। এই বণিক সংগঠনের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। আমরা এই করের বিরোধী। আমাদের সংগঠনের সদস্যদের বলা হয়েছে এই কর না দিতে। পুরসভার পক্ষ থেকে একাধিক কর নেওয়া হয়। এখন জঞ্জাল করের নামে বিপুল আর্থিক বোঝা চাপানোর চেষ্টা করছে পুরসভা। তাঁর দাবি, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে স্কোয়ার ফুট অনুযায়ী জঞ্জাল কর চাওয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কারও কাছে মাসিক ৫০০, আবার কারও উপর এক হাজার টাকার বোঝা চাপানো হচ্ছে। বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কয়েক হাজার টাকার বোঝা চাপছে। এই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট আপত্তি জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে বণিকসভার প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আপত্তির কারণ ব্যাখ্যা করবে।
বণিক সংগঠনের সভাপতির কথায়, শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছেন নতুন করে কোনও কর নেওয়া যাবে না। ইংলিশবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর কথার তোয়াক্কা করছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে ট্যাক্স আদায়ের চেষ্টা করছে পুরসভা।
পাল্টা পুর চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বলেন, বিরোধীদের পয়সা ও ক্ষমতার জোরে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স। এই সংগঠনের পদাধিকারীরা জনপ্রতিনিধি নন। আমরা জনগণের ভোটে জিতে জনস্বার্থে কাজ করছি। ষোড়শ অর্থ কমিশনের বৈঠকে আমি আমন্ত্রিত ছিলাম। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে জঞ্জালের সার্ভিস ট্যাক্স নিতে। কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত মিশনও এই সার্ভিস ট্যাক্স নিতে বলছে। কৃষ্ণেন্দুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছে মালদহের বণিকসভা। মুখ্যমন্ত্রী নতুন কর নিতে বারণ করেছেন। কিন্তু আমরা সার্ভিস চার্জ নিচ্ছি। তাতে বারণ নেই। শহর পরিচ্ছন্ন রয়েছে। মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন। মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের কিছু কর্মকর্তা পুরসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন। এটা চলতে পারে না। পুরসভা আইন মেনে পদক্ষেপ করবে।
সিপিএমের ইংলিশবাজার এরিয়া কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ মিত্র বলেন, আমরা জঞ্জাল কর নেওয়া রুখব। রবিবার প্রথম দিনই কয়েক হাজার মানুষ ইংলিশবাজার পুরসভার কর ফতোয়ার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর করেছেন।