‘মাইথন বা পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়লে প্লাবিত হবে শিলাবতী, জয়পন্ডা নদীও’ — মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। শনিবার তালড্যাংরা - সিমলাপালের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনের পরেই DVC-কে দুষে এই মন্তব্য করেন মন্ত্রী। যা নিয়ে শুরু বিতর্ক। মাইথন বা পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়লে শিলাবতীতে কেন জল বাড়বে? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিজেপির বক্তব্য, ‘মন্ত্রী কি ভূগোল জেনে এই মন্তব্য করছেন?’
গত তিন দিনের বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জেলার তালড্যাংরা ব্লকের জয়পন্ডা নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়। সিমলাপালের শিলাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে বাঁকুড়া- ঝাড়গ্রাম ন’নম্বর রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে একদিন। শনিবার তালড্যাংরা-সিমলাপালের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যান রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই ডিভিসির ড্যামগুলি থেকে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতেই এই পরিস্থিতি হচ্ছে।’ যদিও শিলাবতী বা জয়পন্ডা নদীতে ডিভিসির কোনও ড্যাম নেই। ডিভিসির ড্যাম থাকা দামোদর নদের সঙ্গে এই জেলায় দুটি নদীই মেশেনি। তা হলে কী ভাবে এই বন্যার সঙ্গে DVC-র যোগ হচ্ছে?
মলয় ঘটকের কথায়, ‘এখানে অনেক ডিভিসির ড্যাম আছে। বেশি মাত্রায় জল ছাড়লে বাড়তি জল এখানের নদীতে চলে আসবে। প্রতিটি নদীই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত৷ ফলে মাইথন বা পাঞ্চেত ড্যাম থেকে জল ছেড়ে দিলেও এই দিকে সেই জলের একাংশ চলে আসবে।’
মন্ত্রীর এই যুক্তিকে টেনে এনেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। কেন্দ্রের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘উনি কোন ভূগোল পড়ে এই মন্তব্য করছেন বোঝা যাচ্ছে না। দামোদরের সঙ্গে শিলাবতী বা দক্ষিণ বাঁকুড়ার নদীগুলির কোনও সম্পর্কই নেই।’
বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ভূগোল শিক্ষক সুব্রত পান বলেন, ‘ডিভিসির সব বাঁধ তো দামোদর নদে। আর দামোদর ও শিলাবতী বা জয়পন্ডা এই জেলায় ভৌগোলিক ভাবে দুটি পৃথক নদীতন্ত্র। ফলে ওখানে জল বাড়ার প্রভাব অন্য জায়গায় পড়ার কারণ নেই।’