শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বৃষ্টি কমেছে। জল কিছুটা নেমেছে। তবে এখনও জলের তলায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বিস্তৃর্ণ এলাকা। আজ, রবিবার ঘাটাল মহকুমা শাসকের দপ্তরে প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। বন্যা পরিদর্শনে যান তিনি। তার আগে সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বন্যার জন্য ডিভিসিকে বিঁধলেন মন্ত্রী। ডিভিসি না জানিয়ে ৭১ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
ঘাটালের ১০টি, চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ৫টি ও চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত বন্যা কবলিত। ঘাটাল পুরসভার বেশি কিছু ওয়ার্ডেও জল ঢুকেছে। ১৮৮টি গ্রাম বন্যা কবলিত। প্রায় ২ লাখ মানুষ প্রত্য়ক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২হাজারের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বিশেষ শিবিরে। কমিউনিটি কিচেনের মাধ্যমে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোট ৪৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল। যার অনেকগুলি এখনও চলছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। দুয়ারে ডাক্তার ও মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়েছে।
মন্ত্রীর কথায়, ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যা দুর্গতদের দেওয়া হবে। পানীয় জলের জন্য ট্র্যাঙ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০ হাজার জামাকাপড় বিলি করা হয়েছে প্লাবিত এলাকায়। মানস বলেন, “এই বন্যায় প্রায় ২২০৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার খোঁজ নিচ্ছেন। গ্রামবাসী থেকে প্রসাশনের উচ্চস্তরের প্রতিটি ব্যক্তি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। ‘৭৮ সালের পর এই রকম হড়পা বান আসেনি। আমাদের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজও চলছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গতকাল রূপনারায়ণ ফুলে উঠেছিল। এখন জল একটু নামছে। বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আর বৃষ্টি না হয় সেটাই প্রার্থনা।”
এরপরই ডিভিসিকে বিঁধে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের সঙ্গে ডিভিসির চুক্তি হয়েছিল জানিয়ে জল ছাড়বে। সেই মতোই চলছিল। ৬০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার কথা ছিল, কিন্তু হঠাৎ ছেড়ে দিল ৭১ হাজার কিউসেক জল। বলছে এক, করল এক। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। কেন আমাদের না জানিয়ে জল ছাড়ল? এবার আমাদের কাছে ডেটা আছে। না বলতে পারবে না।” পাশাপাশি মন্ত্রী সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।