• শিশুদের ‘স্নেহের পরশ’, পাজ়ল, নম্বর হুইলে পড়াশোনা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে
    এই সময় | ২২ জুন ২০২৫
  • চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার

    খোলনলচে পাল্টে যাচ্ছে কোচবিহারের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির। মান বাড়াতে আধুনিক করা হচ্ছে প্রত্যেকটি কেন্দ্রকে। শিশুদের খেলার জন্য কেনা হবে নানা সামগ্রী, যা খেলনা মনে হলেও আদতে শিক্ষারই উপকরণ।

    এর সঙ্গে স্মার্ট টিভি বসছে একাধিক কেন্দ্রে। পাশাপাশি ‘স্নেহের পরশ’ নাম একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।

    অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছ’মাস থেকে ছ’বছর বয়সের শিশুরা আসে। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের শিশুরা এখানে এসে খাওয়াদাওয়া করে। প্রি-স্কুল হিসেবে ধরা হলেও পড়াশোনার তেমন অনুকূল পরিবেশ এখানে পাওয়া যায় না।

    তার চেহারা বদলে দিতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম খেলার সামগ্রীর মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার উপযোগী করে তোলা। এ সব শিশুর পরিবারে উপার্জন এতই কম যে, খেলনা কেনা সাধ্যের বাইরে, অ্যাক্টিভিটি গেম-এর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তো দূরের কথা। এই শিশুরা ভবিষ্যতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এসে খেলনার আনন্দও নিতে পারবে।

    কোচবিহার জেলায় ৪ হাজার ১৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্রগুলিতে খেলার সামগ্রী কেনার জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ওই টাকায় প্রত্যেকটি সেন্টারে গড়ে তিন হাজার টাকার এমন সামগ্রী কেনা হবে।

    শিশুদের জন্য মানসিক বিকাশ ও শিক্ষাদানের জন্য নানা খেলার সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, মোট ৩০ ধরনের। এর মধ্যে রয়েছে জিগশ পাজল- একটার সঙ্গে আর একটা টুকরো জুড়ে দেবে ছেলেমেয়েরা।

    নম্বর হুইল ঘুরিয়ে দিলেই শুরু হয়ে যাবে খেলা। অক্ষর চিনে চিনে ফোম অ্যালফাবেট সাজিয়ে তুলবে তারা। থাকছে পাজল বোর্ড, কাউন্টিং ফ্রেম এর মতো খেলার উপকরণ।

    এ সব আদৌ পুতুলখেলার উপকরণ নয়, শিশুদের মনোরঞ্জনের সঙ্গে শিক্ষাদানের অঙ্গ হিসেবে এ ধরনের পাজল, হুইল বহুদিন ধরেই ব্যবহার করা হচ্ছে। শহর-মফসসলের ছেলেমেয়েদের কাছে যা পরিচিত, তা এ বার পাবে অঙ্গনওয়াড়ির শিশুরা।

    এ সব খেলা ও পড়ার সামগ্রী থাকবে কেন্দ্রেই। খাবারের পাশাপাশি এ সবের টানে কচিকাঁচারা আসবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। এর পাশাপাশি জেলার ১০০টি কেন্দ্রে এলইডি স্ক্রিন টিভি লাগানো হবে, যাকে বলা হচ্ছে স্মার্ট সেন্টার।

    এর মাধ্যমে শিশুদের ক্লাস করানো হবে। জেলা প্রশাসন আলাদা করে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করছে কেন্দ্রগুলির জন্য। এই টাকায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এর সঙ্গে লাগানো হবে টিউবলাইট, ফ্যান। সবমিলিয়ে কেন্দ্র-প্রতি এই খাতে খরচ ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

    জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা জানিয়েছেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুরা শুধু খাওয়াদাওয়া করে চলে যাবে বা অভিভাবকরা এসে খাবার নিয়ে চলে যাবেন, সেটা আর হবে না। এখানে শিশুরা খাওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলো ও পড়াশোনা করবে যাতে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। তাই পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)