• বোমা ফেটে কেষ্ট-কাজলের জেলায় মৃত্যু দু’জনের! শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে রণক্ষেত্র লাভপুর
    আনন্দবাজার | ২২ জুন ২০২৫
  • তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ঘিরে উত্তপ্ত বীরভূমের লাভপুর থানার হাতিয়া গ্রাম। বিস্ফোরণে মৃত্যু অন্তত দু’জনের। আহত বেশ কয়েক জন। শনিবার সকাল থেকে এই ঘটনায় উত্তেজনা এলাকায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে সকাল থেকে বোমাবাজি হয় হাতিয়া গ্রামে। গ্রামদখলকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকে শুরু যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, শনিবার সকালে তা চরম আকার নেয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে ফেরার দুই স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মইনুদ্দিন এবং তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করতেই সংঘর্ষ চরম আকার নেয়। স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে শেখ মনিরের নেতৃত্বে একদল লোক মইনুদ্দিনদের বাধা দেয়। শুরু হয় মারামারি।

    অভিযোগ, ওই সময় দুই পক্ষই বোমাবাজি শুরু করে। প্রথমে পিছু হটার পরে আবার গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করেন মইনুদ্দিন ও মুস্তাফি। সেই সময় ছাতিম পুকুরপারে বোমা বাঁধছিলেন মনিরের দলবল। সেখানে আচমকা বিস্ফোরণ হয়। অকুস্থলেই মারা যান দু’জন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক জন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিবাদমান দুই পক্ষই শাসকদলের কাছের। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও রকম সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখের জেলায় আবার রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। এ নিয়ে সরকারি ভাবে তৃণমূল নেতাদের কেউ মুখ খোলেননি।

    ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লাভপুর থানার পুলিশ। এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও সকালে গন্ডগোলের খবর পেয়েও প্রথমে গ্রামে ঢুকতেই পারেনি পুলিশ। পরে বেলার দিকে অকুস্থলে যায় তারা। বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তাধীন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লাভপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং তিন জন আহত হয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ বিষয়টি জানত না। গন্ডগোলের খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে যায়।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রের দাবি, বোমা বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে তিনটি ড্রামে প্রায় ৩০টি তাজা বোমা উদ্ধার করে লাভপুর থানার পুলিশ। বোমাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য সিআইডি বম্ব স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়েছে।

    উল্লেখ্য, গত বছর মার্চ মাসে লাভপুরের এই গ্রামেই অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস পেয়েছিল পুলিশ। সেই সময়ও অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)