‘দুঃখজনক, কিন্তু আমি তো ভগবান নই’! ক্লাসে ছাতা মাথায় পড়ুয়াদের দেখে মনখারাপ রচনার, চান সময়
আনন্দবাজার | ২২ জুন ২০২৫
বৃষ্টির মধ্যে জলে থইথই ক্লাসঘর। ছাতা মাথায় পড়াশোনা করছে কচিকাঁচারা। শিক্ষকও পড়াচ্ছেন ছাতা মাথায় দিয়ে। হুগলির পান্ডুয়ার পাঁচপাড়া প্রাথমিক স্কুলের ওই ছবি দেখে দুঃখপ্রকাশ তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘পড়ুয়ারা ছাতা নিয়ে ক্লাসে বসছে, এর থেকে দুঃখের আর কিছু নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘হুগলিতে এই রকম খারাপ অবস্থা অনেক স্কুলেরই।’’ এর পরেই হুগলির প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন তৃণমূল সাংসদ। অভিযোগ, তাঁর আমলে কোনও কাজই করেননি বিজেপি সাংসদ।
শনিবার চুঁচুড়ায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রচনা। সেখানে পান্ডুয়ার প্রাথমিক স্কুলের দুরবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করতেই রচনার জবাব, ‘‘শুধু পান্ডুয়া নয়, আমার সাতটি বিধানসভা এলাকায় এই রকম অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাইমারি স্কুল আছে, যেগুলোর অবস্থা খুব খারাপ।’’
কটাক্ষ করে রচনা বলেন, ‘‘আমি জানি না, এতগুলো বছরে কোনও কাজ হয়েছে কি না। গত পাঁচ বছরে কিছুই কাজ হয়নি। আমি সাংসদ হওয়ার পরে একটা বছর হয়েছে। আমি তো ভগবান নই। আমার কাছে ৫০ থেকে ৬০টি স্কুল থেকে অভিযোগ এসেছে, যেগুলো ঠিক করা দরকার।’’
পান্ডুয়ার ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক জয়ন্ত গুপ্ত জানিয়েছেন, ২০২৩ সাল থেকেই দুটো ক্লাসঘরের ওই দুরবস্থা। প্রতি বছর বর্ষায় এ ভাবেই পড়াশোনা করতে হয় পড়ুয়াদের। এ ভাবেই ছাতা মাথায় দিয়ে শিক্ষাদান করেন শিক্ষকেরা। বৃহস্পতিবার প্রশাসনের তরফে দু’টি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে তাঁদের। সাংসদ রচনার পরামর্শ, স্কুলগুলোকে ‘বাঁচানো’র জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘যদি বিধায়করা না উঠে পড়ে লাগেন, পুরসভা, পঞ্চায়েত, ব্লক অফিস যদি উদ্যোগী না হন...। সবাইকে নিয়েই এই প্রচেষ্টা চালাতে হবে। স্কুলগুলোকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে। আমি বরাবর বলে এসেছি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য (ক্ষেত্র) নিয়ে আমি কাজ করব। তার জন্য আমি চেষ্টা করছি। যতটা আমার পক্ষে সম্ভব। যাতে ঠিকঠাক করে স্কুলগুলোকে চালানো যায়, সেই চেষ্টা আমার আছে। আমার লোকসভা এলাকায় হাসপাতালগুলো নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে। এই যে ছাতা নিয়ে ছাত্রেরা স্কুলে বসছে, এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না।’’
প্রধানশিক্ষক কি বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছেন? রচনা বলেন, ‘‘১০ দিনে তো কাজ হয় না!’’