হাওড়া থেকে অপহরণ করে খুন এবং বীরভূমে নিয়ে গিয়ে দেহ ফেলে আসার ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অভিষেক সোনকর। সাঁতরাগাছি স্টেশনে তাঁর একটি স্টল (দোকান) রয়েছে। তাঁর সঙ্গে নৈহাটির বাসিন্দা, ফোরশোর রোডের বিস্কুট কারখানার আধিকারিক অনিমেষ মিত্রের ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিল। শুধুই লক্ষাধিক টাকার জন্য খুন না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তদন্ত করে দেখছে হাওড়া সিটি পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়ার বার্ন স্ট্যান্ডার্ড মোড় থেকে নিখোঁজ হয়ে যান অনিমেষ। তাঁর সঙ্গে দেড় লক্ষের বেশি টাকা ছিল। তিনি যাচ্ছিলেন ব্যাঙ্কে। শুক্রবার সকালে অনিমেষের দেহ মেলে বীরভূমে। কাপড়ের টুকরোয় মুখ ঢাকা এবং গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় একটি মাঠে তাঁর দেহ পড়েছিল। অভিযোগ, অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বিস্কুট কারখানার ওই আধিকারিককে।
ওই ঘটনার তদন্তে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড মোড়-সহ পার্শস্থ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। টানা তদন্তের পরে এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত মৃত অনিমেষের পরিচিত। অভিষেক নামে ওই ব্যক্তিকে শনিবার হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জানা যাচ্ছে, সাঁতরাগাছি স্টেশনে একটি স্টল রয়েছে অভিষেকের। সেই স্টলের জন্য তিনি বিস্কুট কিনতেন অনিমেষ যে বিস্কুট কোম্পানিতে কাজ করতেন, সেখান থেকে। পুলিশের অনুমান, অপহরণকারীদের বরাত দিয়েছিলেন অভিষেক। কারণ, তিনি জানতেন অনিমেষ কখন কোন ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যান। কিন্তু লাখ দেড়েক টাকার জন্য অপহরণ করে খুন করা হল যুবককে? ডিসিডিডি বিশ্বজিৎ মাহাতো জানাচ্ছেন প্রাথমিক ভাবে তা-ই মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে। তাদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ধৃতকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনিমেষ মিত্রের কাছে এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকা ছিল। তবে এটা শুধুমাত্র টাকা লুটের জন্য অপহরণ এবং খুন না কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
সিসিটিভি-তে দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি লাল রঙের বাইকে মাঝখানে বসিয়ে অনিমেষকে দু’জন নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ কমিশনার অফিসের কাছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড মোড় থেকে শার্টের কলার ধরে বাইকে তোলা হয়েছিল অনিমেষকে। তখন সময় দুপুর আড়াইটে। শুক্রবার তাঁর দেহ উদ্ধার করে বীরভূমের বোলপুর থানার পুলিশ। খুনের ঘটনার তদন্তে হাওড়া সিটির পুলিশ এবং গোয়েন্দারা।