• বঙ্গোপসাগরে পরপর ট্রলার ডুবি, বাড়ছে আতঙ্ক
    এই সময় | ২২ জুন ২০২৫
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: ইলিশ মরশুমের শুরুতেই ব়ডসড় ধাক্কা! কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শনিবার সকালে এবং দুপুরে বঙ্গোপসাগরে ডুবল দু’টি মাছ ধরার ট্রলার। যদিও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন দুই ট্রলারের ২৯ জন মৎস্যজীবী।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুবে যাওয়া এফবি সাকিলা ট্রলারের ১৩ জন মৎস্যজীবী এবং এফবি মা দুর্গা নামে আরও একটি ট্রলারের ১৬ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে এনেছেন অন্য ট্রলারের মৎস্যজীবীরা।

    উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। একই দিনে পরপর দুটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সুন্দরবনের মৎস্যজীবী মহলে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান করছেন মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা।

    স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে শনিবার ভোর চারটে নাগাদ নামখানার দশমাইল ঘাট থেকে মোট ১৩ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে এফবি সাকিলা নামের ট্রলারটি গভীর সমুদ্রের উদ্দেশে রওনা দেয়।

    বেলা ৯টা নাগাদ জম্বুদ্বীপের পশ্চিম-দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগরের বুকে উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটির পাটাতন ভেঙে যায়। তারপরই ট্রলারটি সাগরে ডুবতে শুরু করে। ট্রলারের মধ্যে থাকা মৎস্যজীবীদের আওয়াজ শুনে পাশে থাকা অন্য একটি মাছ ধরার ট্রলারের মৎস্যজীবীরা তাঁদেরকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন।

    তাঁরাই ১৩ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করেন। তার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আরও একটি মাছ ধরার ট্রলার। দুপুর সাড়ে ১১টা নাগাদ কেঁদো দ্বীপের কাছে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে এফবি মা দুর্গা নামে একটি ট্রলারের পাটাতন ফেটে যায়। তার জেরে ট্রলারের ভিতরে জল ঢুকতে শুরু করে।

    মৎস্যজীবীদের চিৎকার শুনে বেশ কয়েকটি ট্রলার তাঁদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে। ওই ট্রলার থেকে ১৬ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়। রাতে পাথরপ্রতিমা ঘাটে তাঁদেরকে নিয়ে আসা হয়। এফবি মা দুর্গা ট্রলারটি শুক্রবার রাতে নামখানা ঘাট থেকে মাছ ধরতে বেরিয়েছিল।

    কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘খারাপ আবহাওয়া কেটে গেলেও সমুদ্র এখনও উত্তাল। তার জন্যই সম্ভবত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে ট্রলার। এই পরিস্থিতিতে ট্রলারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি।’

    সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘উত্তাল সমুদ্রে জাল খোলাটাই এখন মৎস্যজীবীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। মৎস্যজীবীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রে ইলিশ ধরতে যাচ্ছেন। এ দিন বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন মৎস্যজীবীরা।’

    অভিযোগ উঠছে, ট্রলারগুলোকে ভালো করে রক্ষনাবেক্ষণ না করেই ইলিশ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর প্রশাসনেরও কোনও নজরদারি নেই। তার ফলেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ মৎস্যজীবীরা।

  • Link to this news (এই সময়)