জগদ্দলে চারদিন পর কালভার্টের নীচে মিলল নিহত তৃণমূল নেতার দাদার দেহ
বর্তমান | ২২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন জগদ্দল থানার অদূরে এক চায়ের দোকানে সকাল ৯টা নাগাদ খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন ওয়ার্ড সভাপতি অশোক সাউ। শনিবার দুপুরে জগদ্দলের পালঘাট রোডের একটি নিকাশি নালা থেকে তাঁর দাদা দিলীপ সাউয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর চাউর হতেই তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা ব্যস্ত ঘোষপাড়া রোড অবরোধ করেন। কয়েকটি দোকানও ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। স্থানীয় সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিস বাহিনী। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতা প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডে অভিযোগ করেন, দিলীপ সাউকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের তির তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, অশোক সাউ হত্যাকাণ্ডের অনেক তথ্য তাঁর দাদা জানতেন। সেকারণেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, দিলীপ সাউ মদ খেয়ে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন। এর পিছনে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।
সাউ পরিবারের আরেক ভাই প্রদীপবাবুর অভিযোগ, অশোক সাউ খুন হওয়ার পর আমরা পুলিসকে নিরাপত্তার অভাবের কথা বলেছিলাম। গত চার দিন ধরে দাদাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। জগদ্দল থানাকে জানিয়েছিলাম। পুলিস প্রশাসন যদি সময়ে উদ্যোগী হতো, তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। আমাদের যা সন্দেহ ছিল, তাই হল। দাদাকে কৌশলে সরিয়ে দেওয়া হল। এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে জগদ্দল থানার পুলিস। বিজেপি নেতা প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডে বলেন, অশোক সাউ খুনের ঘটনায় তাঁর ভাই প্রদীপ সাউ আদালতে এনআইএ তদন্ত চেয়ে মামলা করেছিলেন। এরমধ্যেই নিখোঁজ হওয়ার চারদিন বাদে দিলীপবাবুর দেহ কালভার্টের নীচে থেকে পাওয়া যায়। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। যদি তিনি সত্যিই নর্দমায় পড়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে দেহ কালভার্টের নীচে গেল কী করে? এই প্রশ্নকে ঘিরেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। ঘটনাস্থলে ১৪টি সিসি ক্যামেরা থাকলেও কোনও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। পুলিস কমিশনার মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের সময় ভিডিওগ্রাফি করা হবে।