• ‘এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছি’, বারাসতের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার, এলাকায় বাড়ছে ক্ষোভ
    এই সময় | ২২ জুন ২০২৫
  • প্রায় ২৭ বিঘা জমি। উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। তাতেও রক্ষে নেই। বারাসত কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বামুনমুড়ো এলাকার কারখানা ও একাধিক গোডাউনের বিধ্বংসী আগুন গ্রাস করেছে আশেপাশের একাধিক বাড়িতে। প্রাণ হাতে নিয়ে সেই সব বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছেন সকলেই। কারখানা ও গোডাউনগুলোর ভেতরে একের পর এক বিস্ফোরণের কারণে আগুনের গোলা ছিটকে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলোতে। ভোর হওয়ার অপেক্ষায় সকলেই। অনেকেই বলছেন, ‘এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছি। সকাল হলে বুঝতে পারব মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু আর রইল কি না।’ স্থানীয় সূত্রে খবর, কারখানা এলাকার আশেপাশে ৭০-৮০টি পরিবার থাকে। এর মধ্যে ১০-১৫টি বাড়ি অগ্নিকাণ্ডের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মোট ২২টি দমকল ইঞ্জিনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

    বারাসাতের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুহূর্তেই যেন বদলে গিয়েছে পরিবারগুলোর সদস্যদের জীবন। এখনও নেভেনি আগুনের লেলিহান শিখা (প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)। চোখের সামনেই সবকিছু শেষ হতে দেখেছেন সর্বহারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোডাউন ও কারখানায় লাগা আগুন। আগুনের তীব্রতা তখন এতটাই ছিল যে আশেপাশের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসেন বহু পরিবারের মানুষজন। প্রাণ বাঁচাতেই সর্বস্ব ফেলে রেখে বেরিয়ে আসেন সকলে।

    স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতে ইট ভাটার জলা জমি বুজিয়ে একপ্রকার অবৈধভাবেই মাটি ফেলে তৈরি করা হয়েছিল এই কারখানা ও গোডাউনের এলাকা। প্রায় ২৭ বিঘা জমি সুউচ্চ পাঁচিল দিয়েও ঘেরা হয়েছিল। রংয়ের কারখানা-সহ বিভিন্ন জিনিসের কারখানা ছিল এখানে। ছিল ফ্রিজ, এসি এবং ডেলিভারি সংস্থার গোডাউনও। ফলে দাহ্য পদার্থ ব্যাপক পরিমাণে মজুত ছিল গোডাউন ও কারখানায় বলেই জানাচ্ছেন অনেকে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সেই বিধ্বংসী আগুন।

    ডিজি ফায়ার রণভীর কুমার জানিয়েছেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে। আগুন আগে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার পর তদন্ত করে দেখা হবে। পাশাপাশি এই গোডাউনগুলিতে আগুন নেভানোর যে ব্যবস্থা ছিল, তা আদৌ কাজ করেনি বলেই মনে করছেন দমকল বিভাগের একাধিক আধিকারিক। যদিও দমকলের ইঞ্জিন দেরিতে আসা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের। যদিও দমকল সঠিক সময়ে পৌঁছেই কাজ শুরু করেছে বলে দাবি প্রশাসনের। স্থানীয় বিধায়ক রহিমা মণ্ডল বলেন, ‘এলাকার মানুষ আগুন নেভাতে সহযোগিতা করেছেন। আমরা কেউ চাই না এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটুক। তবে এলাকার মানুষের পাশে রয়েছি আমরা।’

  • Link to this news (এই সময়)