সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দুর্যোগের মধ্যেই ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি দিয়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। দুর্যোগ থাকার কারণে উত্তাল ছিল বঙ্গোপসাগর। তার মধ্যে পড়ে গেল ট্রলার। মাঝ সমুদ্রে ডুবে যায় সেটি। ট্রলারে থাকা ১৩ জন মৎস্যজীবী সমুদ্রে তলিয়ে যেতে থাকেন। যদিও অন্য ট্রলারের মৎস্যজীবীরা তাঁদের উদ্ধার করেন। মাঝ সমুদ্র থেকে কার্যত প্রাণে বেঁচে ফিরলেন। তেমনই জানাচ্ছেন সকলে। তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে খবর।
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে দুর্যোগ চলছিল। বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর শনিবার ভোর চারটে নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার দশ মাইল ল্যান্ডিং সেন্টার থেকে মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে বেরিয়েছিলেন। এফবি শাকিলা নামে একটি ট্রলারে ১৩ জন মৎস্যজীবী ছিলেন। বৃষ্টিতে ইলিশ ধরাই ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। মাঝ সমুদ্রে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই ট্রলার। জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জম্বু দ্বীপ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ওই ট্রলারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একসময় ট্রলারটিতে জল ঢুকতে শুরু করেছিল। ক্রমশ সেটি ডুবে যেতে শুরু করে।
মাঝ সমুদ্রে কি তাহলে সলিলসমাধি? আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ১৩ জন মৎস্যজীবীদের। বাঁচার জন্য তাঁরা আর্তনাদ করতে থাকেন। একসময় অন্যান্য ট্রলার দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছয়। ডুবন্ত ট্রলার থেকে একে একে উদ্ধার হন মৎস্যজীবীরা। একটি ট্রলারে তাঁদের নামখানায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে খবর। ওই ট্রলারটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে ট্রলারের তলা ফেটে ভিতরে জল ঢুকতে শুরু করে। তবে সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মৎস্যজীবীরা ফিরে আসছেন শুনে স্বস্তি ফিরেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের।
অন্যদিকে, এদিনই এফ বি মা দুর্গা নামে একটি ট্রলার ইলিশ ধরতে গিয়ে উত্তাল সমুদ্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এই ট্রলারটিরও নিচের পাঠাতন ফেটে জল ঢুকতে থাকলে সেটি ডুবতে থাকে। কেঁদো দ্বীপের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা সতীনাথ পাত্র বলেন, “ওই ট্রলারটিতে থাকা ১৬ জন মৎস্যজীবীকেই উদ্ধার করেছে আশপাশে থাকা অন্য ট্রলারগুলি। এই ট্রলারটি শুক্রবারই নামখানা থেকে বেরিয়েছিল।” এদিকে মা দুর্গা ট্রলারের উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের পাথরপ্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসা হচ্ছে।