কার্টুন নাকি সিনেমা? বোনেদের সঙ্গে টিভি দেখা নিয়ে বিবাদ, অভিমানে ‘আত্মঘাতী’ কিশোরী দিদি
প্রতিদিন | ২২ জুন ২০২৫
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: টিভি দেখা নিয়ে তিন বোনের মধ্যে প্রায়শই ঝগড়া হত। শুক্রবার রাতেও ঝামেলা চরমে উঠেছিল। রাগ করে অন্য ঘরে চলে গিয়েছিল বড়দিদি বছর ১৫-এর কিশোরী। পরে সেই ঘর থেকে উদ্ধার হল তার ঝুলন্ত মৃতদেহ। টিভি দেখা নিয়ে বিবাদের জেরেই কি সে অভিমানে আত্মহত্যা করল? সেই প্রশ্ন উঠেছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের চৈনগর পঞ্চায়েত এলাকায়।
জানা গিয়েছে, ভরতপুর এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর বর্মণ পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। তিনি দিল্লিতে কর্মরত। বাড়িতে স্ত্রী ও তিন মেয়ে থাকেন। জানা গিয়েছে, তিন বোনের মধ্যে টিভি দেখা নিয়ে প্রায়শই বিবাদ হত। শুক্রবার রাতেও সেই ঘটনা ঘটেছিল। ১২ বছরের দুই বোন কার্টুন দেখার জন্য জেদ ধরেছিল। আর ১৫ বছরের ওই কিশোরী সিনেমা দেখবে বলে অনড় ছিল। তাই নিয়ে দুই বোনের সঙ্গে তার প্রবল বিবাদ হয়। পরে সেই ঘর থেকে ওই কিশোরী বেরিয়ে যায়। রাতে অন্য ঘর থেকে তার ওড়নার ফাঁস জড়ানো ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। রাতে মেয়েকে খেতে ডাকতে গিয়ে ওই ঘটনা দেখেন মা গীতা দেবী।
খবর দেওয়া হয় পুলিশে। হেমতাবাদ থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, টিভি দেখা নিয়ে বিবাদের জেরেই অভিমানে ‘আত্মঘাতী’ হয়েছে সে। টিভি দেখা নিয়ে এমন মর্মান্তিক ঘটনা হতে পারে? হতবাক প্রতিবেশীরাও। মা গীতা দেবী বলেন, “রাতে রান্নাঘরে রান্না করছিলাম। তখন মেয়েরা ঘরে টিভি দেখছিল। তারপর রান্নার শেষে রাতে খেতে ডাকতে ঘরে গিয়ে দেখি মেয়ে ঝুলছে। কিন্তু বড় মেয়েটা হঠাৎ এভাবে চলে যাবে, এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না।” দুঃসংবাদ শুনে দিল্লি থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন শঙ্কর বর্মণ। হেমতাবাদ থানার আইসি সুজিত লামা বলেন, “ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হবে।”