রিলস বানানোর নেশাই কাল! অজয় নদে তলিয়ে গেল দুই স্কুল পড়ুয়া
প্রতিদিন | ২২ জুন ২০২৫
ধীমান রায়, কাটোয়া: বিকেলে দুই বন্ধু মিলে ঘুরতে বেড়িয়েছিল। শখ হয়েছিল ঘোরার ফাঁকে অজয়নদে স্নান করার। মাছ ধরার ডিঙ্গিতে ব্যাগপত্র ও মোবাইল ফোন রেখে স্নান করতে নেমেছিল তাঁরা। সেটাই কাল হল! স্রোতে তলিয়ে গেল দশম শ্রেণির দুই পড়ুয়া। স্থানীয়দের অনুমান, রিলস তৈরির নেশাতেই ওই দুই কিশোরের মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার কাঁকুরহাটির কাছে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গিয়েছে নিখোঁজ দুই কিশোর- ১৫ বছরের আয়ান আহমেদ ও ১৫ বছরের মহম্মদ তাহমিদ নূর। দুজনেরই বাড়ি কাটোয়া শহরে। আয়ান কাটোয়া শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। বাবা আব্বাস শেখ পুলিশের চাকরি করেন। কটোয়া স্টেশনবাজারে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। অপরদিকে মহম্মদ তাহমিদ নূর মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগে আল আমিন মিশনের দশম শ্রেণির পড়ুয়া। বাবা ফিরোজ শেখ পুলিশে চাকরি করেন। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়ান ও তাহমিদ দুপুর আড়াইটে নাগাদ স্কুটি নিয়ে কাটোয়া থেকে বের হয়। প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে কেতুগ্রামের কাঁকুরহাটিতে আসে। সড়কপথ ও অজয়নদের মাঝামাঝি যাচ্ছে রেলপথ। সড়কপথের ধারে স্কুটি রেখে হাঁটতে হাঁটতে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে অজয়নদের ধারে চলে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কাঁকুরহাটির এই জায়গায় প্রায়শই অনেকে রিলস বানাতে আসেন। বিকেল চারটের পর ওই দুজন যখন নদীর ধারে আসে তখন অবশ্য লোকজন ছিল না। ঘাটের কাছে লাগানো ছিল একটি মাছ ধরার ছোট ডিঙি। দুই কিশোর তাদের ব্যাগ ও মোবাইল ফোনদুটি ওই ডিঙিতেই রেখে নদীতে নামে।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী কালীচরণ মাজি অজয়নদের ধার দিয়ে যাওয়ার সময় শুনতে পান দীর্ঘক্ষণ ধরেই ডিঙির উপর রেখে যাওয়া মোবাইল বেজেই চলেছে। কিন্তু ধরার কেউ নেই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে এক গ্রামবাসী উত্তম ঘোষকে বলেন। উত্তমবাবু যখন ঘাটের কাছে আসেন তখনই মোবাইলে রিং হচ্ছে। তিনি কল রিসিভ করেন। তাঁর কাছ থেকেই খবর যায় বাড়িতে। খবর পায় পুলিশও। স্থানীয়দের অনুমান ডিঙিতে মোবাইল রেখে ভিডিও করার ইচ্ছাতেই দুই কিশোর নদীতে নামে। তারপর অজয় নদের স্রোতে তলিয়ে যায়। নিখোঁজ দুই কিশোরের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।খবর দেওয়া হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগে। অজয়নদে তল্লাশি চালানোর তোরজোড় শুরু হয়েছে।