ক্লাসরুমের টিনের চাল ফুটো। অঝোরে বৃষ্টির জল ঝরছে। তার মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। পাণ্ডুয়ার পাঁচপাড়া প্রাথমিক স্কুলের এই ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাজনৈতিক টানাপড়েনও চরমে উঠেছিল। শনিবার এই নিয়ে মুখ খুললেন হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই স্কুল তাঁর কেন্দ্রেই পড়ে। রচনা বললেন, ‘এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না।’
ক্লাসরুমের বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন সাংসদ। শুধু মেনেই নেননি। তাঁর সংসদীয় এলাকার বহু স্কুলেরই যে এমন দশা, তা স্বীকারও করেন রচনা। তিনি বলেন, ‘শুধু পাণ্ডুয়া নয়, আমার সাতটি বিধানসভায় এই রকম অনেক অঙ্গনওয়াড়ি, প্রাইমারি স্কুল আছে যেগুলোর অবস্থা খুব খারাপ। স্কুল মেরামতির জন্য রচনার কাছেও আবেদন জানিয়েছিলেন পাঁচপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক জয়ন্ত গুপ্ত। এ দিন সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংসদ বলেন, ‘দশ দিনে তো আর সব কাজ হয় না।’
এই নিয়ে বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন রচনা। হুগলির সাংসদ ছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর নাম না করে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘আমি জানি না এতগুলো বছরে কোনও কাজ হয়েছে কি না! গত পাঁচ বছরে কোনও কাজই হয়নি।’
তৃণমূল সাংসদ এ দিন সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ‘একবছর সাংসদ হয়েছি। আমি তো ভগবান নই। আমার কাছে ৫০ থেকে ৬০ টা স্কুলের অভিযোগ এসেছে। সেগুলো ঠিক করা দরকার। বিধায়ক, পুরসভা, পঞ্চায়েত, ব্লক তো বটেই সাধারণ মানুষকেও উঠে পড়ে লাগতে হবে।’
এলাকার স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা নিয়েই তিনি কাজ করতে চান। এ দিন তাও জানিয়েছেন রচনা। আমি চেষ্টা করছি, যাতে ঠিক ভাবে স্কুলগুলো চালানো যায়। হাসপাতালগুলো নিয়েও আমার চিন্তাভাবনা আছে।’ এই যে ছাতা নিয়ে পড়ুয়ারা স্কুলে ক্লাস করছে। এর থেকে দুঃখের আর কিছু হতে পারেনা।
সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তুষার মজুমদার পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের দিকে। তাঁর দাবি, ‘সাংসদ থাকাকালীন লকেট চট্টোপাধ্যায় অনেক কাজ করেছেন। কিন্তু আমাদের দিকে আঙুল তুলে কী হবে? বিধায়ক তো তৃণমূলের ছিল। তাঁরা কী করেছেন?’
পাঁচপাড়া প্রাথমিক স্কুলের বেহাল দশা। টিনের চাল চুঁইয়ে জল পড়ছে। আর তার মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। শিক্ষকের মাথাতেও ছাতা। এই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সংশ্লিষ্ট সব জায়গাতেই স্কুল মেরামতির আর্জি জানিয়েছেন প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত গুপ্ত। কিন্তু কাজ হয়নি এখনও। অভিযোগ এমনই। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন রচনা।