এই সময়: বিজ্ঞাপনে আর মুখ ঢাকবে না কলকাতার। শহরের রাস্তায় থাকবে শুধু মনোপোলের (এক ধরনের লম্বা লোহার থাম) বিজ্ঞাপন। কলকাতার সৌন্দর্যায়ণ বৃদ্ধির জন্য এ বার নতুন বিজ্ঞাপন নীতি কার্যকর করতে চলেছে পুরসভা।
শুক্রবার এ কথা জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কাছে আমরা বিজ্ঞাপন নীতির খসড়া পাঠিয়েছিলাম। সরকার তাতে অনুমোদন দিয়েছে। এ বার বিজ্ঞাপনের নতুন টেন্ডার কার্যকর করা হবে।’
কলকাতায় বহু দিন ধরে বেআইনি বিজ্ঞাপনের কারবার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে সেখানে ব্যানার, হোর্ডিং, প্ল্যাকার্ড, পোস্টার দিয়ে চলতো এই কারবার। শহরের মুখ বিজ্ঞাপনে ঢেকে যাওয়ার পরেও পুরসভার কোষাগারে বিজ্ঞাপন বাবদ পর্যাপ্ত অর্থ আসতো না। তাই নতুন বিজ্ঞাপন নীতি প্রণয়নের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পুরসভা।
ফিরহাদ জানান, এ বার থেকে একেকটি সংস্থাকে একেকটি রাস্তার টেন্ডার দেওয়া হবে। ওই রাস্তায় কোনও ব্যানার, হোর্ডিং, প্ল্যাকার্ড, পোস্টার লাগানো যাবে না। শুধু মনোপোলে লাগাতে হবে বিজ্ঞাপন। পুরোনো সব টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হলেই নতুন টেন্ডার থেকে এ সব শর্তেই বিজ্ঞাপন লাগাতে হবে শহরে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকবছর ধরে বিজ্ঞাপন বিভাগ থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আসছিল তা নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না মেয়র। কলকাতা পুরসভা সরাসরি যে বিভাগ থেকে আয় বাড়াতে পারে তার একটি হলো বিজ্ঞাপন।
অথচ সেই বিজ্ঞাপনী আয়ের রুগ্ন দশা দেখে বছর খানেক আগে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত নীতি বদলের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল পুরসভার মেয়র পারিষদের বৈঠকে। এরপরে সেই খসড়া নবান্নে পাঠানো হয়েছিল অনুমোদনের জন্য।
তবে, কলকাতা পুরসভার এই নতুন বিজ্ঞাপন নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিরোধী দল বিজেপির তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সারা কলকাতায় এই নতুন বিজ্ঞাপন নীতি মানা হবে তো, পুজো কিংবা ভোটের সময়ে এই নতুন নীতি মেনে সমস্ত পুজো কমিটি এবং রাজনৈতিক দল চলবে তো, এ সব ক্ষেত্রে শাসক দল কোনও সুবিধা পাবে না তো?
কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ বলেন, ‘সকলের জন্য এই নীতি হলে অবশ্যই মানবো। তবে কেউ যদি নীতি থেকে ছাড় পায়, তাহলে আমিও মানবো না।’