ইতিমধ্যেই বাংলায় প্রবেশ করেছে বর্ষা। রাজ্যের একাধিক জেলায় চলছে প্রবল বর্ষণ। রাজ্যের দুর্যোগ নিয়ে নবান্নে সম্প্রতি জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, নবান্নের পক্ষ থেকে তিন জেলায় পাঠানো হচ্ছে বিশেষ দল। অন্যদিকে ডিভিসি কত জল ছাড়ছে সে বিষয়েও বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
জানা গিয়েছে, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব। প্রবল বৃষ্টির জেরে কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বিস্তারিত জেনেছেন তিনি। সেই মতো শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রীরা জেলায় জেলায় গিয়ে পরিদর্শন করেন পরিস্থিতি। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াও এদিন রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। শুক্রবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারাজ পরিদর্শনে যান মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এদিন ব্যারাজের রাস্তা সংস্কারের কাজ ঘুরে দেখার সময় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সেচমন্ত্রীর অভিযোগ, একাধিকবার চিঠি পাঠানো সত্ত্বেও দামোদরে ড্রেজিং করছে না কেন্দ্র। এর ফলে বর্ষাকালে জলের চাপ বাড়ছে, বন্যার সম্ভাবনাও থাকছে। তাঁর দাবি, বারবার জানানো হলেও কেন্দ্র কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘ড্রেজিং না হওয়ায় নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। জল সহজে বইতে পারছে না। আর তাতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের রাজ্যকে।’
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ৪৩ হাজার ৭৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সেচ দপ্তরের স্থানীয় কর্তারা। ফলে দামোদর উপত্যকায় নিচু এলাকা গুলিতে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রী দাবি করেছেন, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট বাঁধ কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ‘তেনুঘাট থেকে হঠাৎ করে, কোনও পূর্বাভাস ছাড়াই জল ছাড়ার ফলেই পশ্চিমবঙ্গে জলস্তর বেড়ে যাচ্ছে।’
সেচমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এদিন ব্যারাজ চত্বরে সম্প্রতি সংস্কার হওয়া রাস্তার কয়েকটি জায়গায় সিলিং উঠে যেতে দেখা যায়। সেগুলি দ্রুত সারানোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
পরিদর্শন সেরে সোজা বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন মানস ভুঁইয়া। সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি বন্যা কবলিত কিছু এলাকাও ঘুরে দেখার কথা তাঁর। এছাড়া দুর্গাপুর ব্যারাজে একটি বিকল্প সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে সেচমন্ত্রীর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। এদিনের কর্মসূচিতে বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।