এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বীরভূমের লাভপুর থানার হাথিয়া গ্রাম। শনিবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। আহত ৫ থেকে ৬ জন। অভিযোগ, পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, পুলিশকে ঢুকতেও বাধা দেন গ্রামবাসীরা। বেলা সাড়ে এগারোটা বড় বাহিনী নিয়ে গিয়ে গ্রামে ঢোকে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শেখ মইনুদ্দিন, মকবুল শাহ, শরিফুল শাহরা গ্রামে নকল সোনার কয়েনের কারবার করতো। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানিতেও তারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। সম্প্রতি মকবুল ও তার সঙ্গীদের গ্রাম থেকে বের করে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাথিয়া গ্রামে তৃণমূল নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অসামাজিক ও দুষ্কর্মে যুক্ত থাকার জন্য ওদের গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার দলবল নিয়ে বোমাবাজি করতে করতে ওরা গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে। গ্রামবাসীরাই রুখে দাঁড়ান। সেই সময় তারা পালিয়েও যায়।’
অভিযোগ, এরপর এ দিন সকালে ফের গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে মইনুদ্দিন, মকবুলরা। শুরু হয় বোমাবাজি। সেই সময় পুকুর পাড়ে বসেছিলেন শেখ সাবির (১৪) এবং শেখ আলমগীর (২৪)। বোমার আঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। ১০ বছর বয়সী এক নাবালকেরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তার নাম-পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। আহত হয়েছেন প্রায় ৫ থেকে ৬ জন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মৃত ২ যুবক স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ছেলে। তবে মৃতরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
বোমাবাজির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’ নাবালকের মৃত্যু নিয়ে কিছু বলেননি তিনি। ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। বোলপুর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘তৃণমূল বরাবরই অসামাজিক কাজকর্মকে উৎসাহ দিয়েছে। আজ তারই ফল পাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর মার্চে নকল অস্ত্র কারখানা উদ্ধার ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল হাথিয়া। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ এমনকী গাড়ি ভাঙচুরও হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই বোমাবাজিতে ২ যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।