পার্ক সার্কাস বাজার পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে একাধিক মূল শর্তে বদল আনল কলকাতা পুরসভা। ২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মেয়র পরিষদে অনুমোদিত প্রস্তাবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। যা চলতি বছরের ৩০ মে মেয়র পরিষদে পুনর্বিবেচনার পরে আগামী ২৫ জুন পুরসভার মাসিক অধিবেশনে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হওয়ার জন্য পেশ হতে চলেছে।
মূলত দোকান ভাড়া, নাম পরিবর্তনের ফি, সাব-ফ্লোর ব্যবস্থাপনা, দোকান হস্তান্তরের নিয়ম এবং ‘দখলদার’ হিসাবে চিহ্নিত ব্যবসায়ীদের বৈধকরণের প্রক্রিয়া— এই সব বিষয়ে পুরসভার আগের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন ও সংশোধন আনা হয়েছে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, এই বাজারটি পার্ক সার্কাস ময়দানে সরানোর পরে অস্থায়ী দোকানের জন্য প্রতি বর্গফুটে মাসিক ভাড়া হবে দু’টাকা। তবে পুনর্গঠিত বাজারে ফিরে গেলে প্রতি বর্গফুটে সেই হার হবে পাঁচ টাকা। নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যাঁরা প্রয়াত ব্যবসায়ীর আইনি উত্তরাধিকারী, তাঁদের জন্য চার্জ কমানো হয়েছে।
অবৈধ বা অননুমোদিত সাব-ফ্লোর নতুন করে অনুমতি পাবে না— এটি সংশোধিত শর্তে স্পষ্ট করা হয়েছে। শুধুমাত্র পূর্বে অনুমোদিত সাব-ফ্লোরই পুনর্গঠিত দোকানে বিবেচিত হবে। একই ভাবে, যাঁরা অতিরিক্ত জায়গা দখল করেছেন, তাঁদের তা সরকারি বাজারমূল্যে বৈধ করতে হবে। বরাদ্দকৃত এলাকার চেয়ে কম জায়গা ব্যবহারকারীরা ভবিষ্যতে অতিরিক্ত জায়গা ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। এর জন্য আলাদা চার্জ দিতে হবে না।
এ ছাড়াও যাঁরা কোনও কারণে সাময়িক স্থানান্তরে রাজি নন, অথচ দোকানের অধিকার রাখতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়েছে। দোকান বন্ধ থাকলে পুরসভা সেই দোকানগুলির মালিকানা নির্ধারণে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এবং কোনও দাবি না এলে দোকান খালি করে তার তালিকা প্রস্তুত করবে।
‘দখলদার’ হিসাবে চিহ্নিত ব্যবসায়ীদের জন্যও বড় ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ— এই সময়কালে যাঁরা নিয়মিত ব্যবসা করেছেন, তাঁদের ‘রেকর্ডেড পারমিট হোল্ডার’-এ পরিবর্তন করে বৈধকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুরসভা।
পুরসভার নথি অনুযায়ী, বাজার পুনর্গঠনের কাজ শুরু হওয়ার দিন থেকে দু’বছরের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে হবে। এখন যত দোকান আছে, ঠিক ততগুলি দোকান তৈরি হবে এবং তা দরপত্রের মাধ্যমে বরাদ্দ করা হবে। যে সব ব্যবসায়ীর দোকানে বকেয়া রয়েছে, তা দোকানের দাম ধার্য করার সময়ে তার সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
পুরসভা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে লিখিত চুক্তির খসড়াও প্রস্তুত হয়েছে, যাতে দোকান বরাদ্দ, স্থানান্তর, ভবিষ্যৎ মালিকানা নিয়ে কোনও বিতর্ক না থাকে।