ফের চোর সন্দেহে গণপিটুনি কলকাতায়। যার জেরে গুরুতর জখম হওয়া ৩৬ বছরের এক যুবককে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। তাঁর শরীরে একাধিক হাড় ভেঙেছে। পায়ে ড্রিল যন্ত্র ঢুকিয়ে ফুটো করে দেওয়ার মতো ক্ষত রয়েছে বলেও আক্রান্তের পরিবারের অভিযোগ। কড়েয়ার কুষ্টিয়া রোডের এই ঘটনায় গত বুধবার একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
মহম্মদ সিকন্দর আজ়ম নামে আক্রান্ত যুবকের পরিবারের দাবি, গত রবিবার থেকে দফায় দফায় ওই যুবককে মারধর করা হলেও পুলিশ কিছুই করেনি। থানায় গিয়েও লাভ হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। যদিও লালবাজারের দাবি, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, যদি পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ থাকে, তা হলে স্থানীয় উপ-নগরপালের অফিসে জানাতে হবে। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।
কড়েয়ার মসজিদবাড়ি লেনে বাড়ি সিকন্দরের। ওই চত্বরেরই ২৫ নম্বর খাটাল নামে একটি জায়গায় গত রবিবার কয়েক জন তাঁকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। সিকন্দরের স্ত্রী সেহেনারা বেগমের দাবি, ‘‘সিকন্দর রিকশা চালায়। ও নাকি একটি মোবাইল চুরি করেছে। এই অভিযোগে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে রবিবার বেধড়ক মারা হয়েছে। একই ভাবে মারা হয়েছে সোম এবং মঙ্গলবারও।’’ সিকন্দরের দিদি ফিরদৌস আজ়মের অভিযোগ, ‘‘রাজু নামে একটি ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করে সিকন্দর। মোবাইল নিয়ে খোঁজ পড়ার পর থেকেই রাজুকে আর দেখা যাচ্ছে না। এখন সিকন্দরের উপরে চুরির দায় চাপিয়ে মারধর করা হচ্ছে। মঙ্গলবারই আমরা থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কিছুই করেনি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, কড়েয়া থানা এই ঘটনায় জাহিদ হোসেন, মনোয়ারা হোসেন, সাহিদ আলি, বিকাশ রাউত নামে চার জনকে গ্রেফতার করেছে। সাহিদ ও সিকন্দর পূর্ব-পরিচিত এবং সাহিদের মোবাইল ফোনই চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জেরায় দাবি করেছেন ধৃতেরা। কিন্তু এটি আদৌ মোবাইল চুরির ব্যাপার কিনা, তা দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনাপ্রবাহের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।