রাজ্য পুলিশের কুড়িজন অফিসার-কর্মীকে ছ’মাসের মাদক আইনের প্রশিক্ষণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশ সত্রের খবর, সম্প্রতি বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (লিগ্যাল)-কে ওই নির্দেশ দেন। হাই কোর্টের নির্দেশ, প্রশিক্ষণ শেষ হলে তবেই ওই পুলিশকর্মীরা মাদক আইনের মামলার তদন্ত এবং তল্লাশি অভিযানে যেতে পারবেন। মাদক মামলায় ধৃতদের জামিনের শুনানিতে ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তার পরেই ওই নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। আগামী মাস থেকে ওই প্রশিক্ষণ শুরু হতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, মালদহ এবং ইসলামপুর পুলিশ জেলায় কর্মরত ওই পুলিশকর্মীরা মাদক মামলায় তল্লাশি এবং ধরপাকড়ের দলে থাকলেও বিচার চলার সময় অভিযুক্তদের ‘চিনতে’ পারেননি বলে খবর। সেই তথ্যই হাই কোর্টের সামনে উঠে এসেছিল। উল্লেখ্য, এমন একটি ক্ষেত্রে বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করে রাজ্য পুলিশকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। ডিআইজি (লিগ্যাল) সেই রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্টে ওই কুড়ি জন পুলিশকর্মীর নাম ছিল।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপও করা হবে। তবে পুলিশের একাংশের বক্তব্য, মাদক আইনে গ্রেফতারের সময় সেই দলে অনেক পুলিশকর্মী থাকেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হয় তো কয়েক মিনিট সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তকে দেখে থাকেন। গ্রেফতারের প্রায় ছ’-সাত বছর পরে সেই মামলার বিচার শুরু হয়। তারও পরে ওই শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া হয়ে থাকে। তাই এই দীর্ঘ সময়ে কোনও পুলিশকর্মীর স্মৃতি থেকে কয়েক মিনিট দেখার অভিজ্ঞতা মুছে যেতে পারে, তেমনই অভিযুক্তের চেহারার বদল হতে পারে। তার ফলেই শনাক্তকরণে গরমিল হতে পারে। এমন যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক করেছে ভবানী ভবন।
অনেকে অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন, মাদক মামলার দলে অনেক পুলিশকর্মী থাকতেই পারেন। কিন্তু তাঁদের সবাইকে কি সাক্ষী হিসেবে পেশ করা হয়? যদি মামলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত নয় এমন কাউকে সাক্ষী হিসেবে কোর্টে হাজির করানো হয় তা হলে তো পুলিশের আইনি লড়াইয়ের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে! এ-ও প্রশ্ন উঠেছে, মাদক মামলায় ধৃতদের জামিন ঠেকাতে এই যুক্তি কি হাই কোর্টে দিয়েছিল পুলিশ?