শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বৃহস্পতিবার বিশেষ বিমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দিল্লির এমস হাসপাতালে। কিন্তু এ রাজ্যে এমস থাকা সত্ত্বেও তা কেন প্রয়োজ হল, এই প্রশ্নই এখন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন কল্যাণী এমসের উপর ভরসা রাখতে পারল না কেন্দ্র? তবে কি তা এখনও প্রস্তুত নয়?
গত কয়েক দিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ অভিজিৎ। তিনি অগ্ন্যাশয়ের সমস্যায় ভুগছেন, সঙ্গে রয়েছে পাচনতন্ত্রে সংক্রমণ। গত শনিবার থেকেই তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হসপাতালে আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন। বিজেপি সূত্রের খবর, উন্নততর চিকিৎসার প্রয়োজনেই তাঁকে দিল্লি এমসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি, লোকসভা ভোটের আগে কল্যাণী এমসের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই অবশ্য কিছু বহির্বিভাগ চালু ছিল। প্রশ্ন উঠছে, এক বছর পরেও এমন কী সমস্যা রয়েছে, যে কারণে অভিজিৎকে এখানে রেখে চিকিৎসা করানোর ঝুঁকি নিতে চায়নি কেন্দ্র? শুক্রবার কল্যাণী এমসের জনসংযোগ আধিকারিক তথা চিকিৎসক সুকান্ত সরকার বলেন, “আমাদের গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগে চিকিৎসক মাত্র এক জন। আপাতত জেনারেল মেডিসিন বিভাগের মাধ্যমে ওই বিভাগে রোগীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, “এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও ঘাটতি রয়েছে কর্মীর। তাই হয়তো কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।”
এই ধরনের চিকিৎসায় রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো কেমন? কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার এবং বর্তমানে কল্যাণী জেএনএমের অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার অতীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, "এসএসকেএমে গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগ রয়েছে। নিজস্ব আইসিইউ-ও আছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বহু বিশিষ্ট জনও সেখানে সুস্থ হয়েছেন। তবে রোগী কোথায় চিকিৎসা করাবেন, সেটা সম্পূর্ণ তাঁর বা তাঁর নিকটজনদের উপর নির্ভর করে।”
প্রাক্তন বিচারপতির জন্য বিজেপি সরকার কল্যাণীর বদলে এমস বেছে নেওয়ায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অভিজিৎবাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। তবে এটা পরিষ্কার যে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী লোকসভা ভোটের আগে কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করলেও, প্রকৃত অর্থে সেখানে উন্নত পরিষেবা মিলছে না।” রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “কল্যাণী এমস নতুন হাসপাতাল। তাই সেখানে সমস্ত বিভাগ, সব রকম পরিকাঠামো এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।”