যুবক-মৃত্যুর তদন্ত থমকে চার বছর, দায়িত্ব হস্তান্তর করল কোর্ট
আনন্দবাজার | ২১ জুন ২০২৫
চার বছর আগে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল বালির বাসিন্দা এক যুবকের। সেই মৃত্যু নিয়ে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন ওই যুবকের বাবা। কিন্তু চার বছরে তদন্ত এগোয়নি! শুক্রবার সেই মামলার তদন্তভার হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। তাঁর নির্দেশ, বালি থানার তদন্তকারী অফিসার এই মামলার নথি গোয়েন্দা বিভাগকে হস্তান্তরিত করবেন এবং তার পরে দ্রুত পদক্ষেপ করবেন গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারী অফিসার। তদন্তে তদারকি করবেন সহকারী নগরপাল পদের কোনও আধিকারিক। এ দিন বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এক জন হতভাগ্য বাবা তাঁর সন্তানের মৃত্যুর বিচার চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। আপনারা তাঁর ছেলেকে ফেরাতে পারবেন না। কিন্তু বিচার দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’
আদালতের খবর, ২০২০ সালে হাওড়ার বস্ত্র ব্যবসায়ী ওই যুবকের সঙ্গে লিলুয়ার এক তরুণীর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। অভিযোগ, স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি করেছিলেন যুবক এবং তার জেরে অশান্তি শুরু হয়। সেই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেন। তাঁর পরিবারের আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, স্ত্রীর সামনেই আত্মঘাতী হন যুবক। স্ত্রী স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে সেই আত্মহননের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিয়ো করেছিলেন।
মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানায় যুবকের পরিবার। কিন্তু পুলিশ তদন্তে সক্রিয় না হওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতের পরিজনেরা। অভিযোগ, ওই তরুণীর মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠায়নি পুলিশ। তরুণীকে গ্রেফতার করা হলেও জামিন পান তিনি। তদন্তও বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এর আগের শুনানিতে পুলিশের এই ‘কীর্তি’ দেখে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি সিংহ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে, বর্তমান তদন্তকারীরা অনভিজ্ঞ। তাই দক্ষ আধিকারিকের বিষয়ে জানাতে হবে রাজ্যকে।’’ সেই মতো এ দিন তদন্তভার হাওড়ার গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়ার আর্জি জানান রাজ্যের কৌঁসুলি।