দ্রুত বাড়ি ফিরব, ‘অপারেশন সিন্ধু’তে নাম নথিভুক্ত করেছি, ইজ়রায়েল থেকে বললেন অনিরুদ্ধ
আনন্দবাজার | ২১ জুন ২০২৫
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েলে ছেলে বন্দি থাকায় কার্যত উদ্বেগের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অনিরুদ্ধ বেরার বা-মামা। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ মিনিট চারেকের জন্য অনিরুদ্ধের সঙ্গে কথা হয়েছে বাবা অসীম বেরা এবং মা রাখি বেরার। অনিরুদ্ধ বলেন, “অপারেশন সিন্ধু’তে নাম লিখিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরব।” ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে সংঘর্ষের আবহে দুই দেশ থেকেই ফেরানো হবে ভারতীয় নাগরিকদের। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্ধু’।
কিছু ক্ষণের জন্য পরিস্থিতি ভাল থাকায় সেই সময়ে ফোন করার সুযোগ পেয়েছিলেন ছেলে। অনিরুদ্ধ ফোনে তাঁর বাবাকে জানান, দিনে খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো না হওয়ায়, রাতে রান্না করে খেয়েছেন তিনি। ফোনে তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় পড়ুয়াদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে যাঁরা ভারতের বাসিন্দা এবং যাঁরা দেশে ফিরে যেতে চান, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন ওখানকার আধিকারিকেরা। নাম নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছিল বলে জানতে পারেন অসীম। সেখানে অনিরুদ্ধ দেশে ফিরে আসার জন্য তাঁর নাম নথিভুক্ত করে এসেছেন। তিনি আশা করছেন দিন কয়েকের মধ্যেই হয়তো তাঁদেরকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করবে দুই দেশের সরকার। অনিরুদ্ধের জার্মান, জাপান, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডসের বন্ধুরা তাঁদের দেশে ফিরে গিয়েছেন।
অনিরুদ্ধের বাবা জানান, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিলিয়ে বেশ অনেক বার ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, “ইজ়রায়েলের যা পরিস্থিতি তাতে ছেলে দ্রুত দেশে ফিরে আসুক সেটাই চাই। আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইজ়রায়েল ফিরে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “ছেলের কাছ থেকে জানতে পেরেছি হাওড়া, কলকাতা, বর্ধমান, মেদিনীপুরের অনেক ছেলে ওখানে রয়েছেন।”
অনিরুদ্ধের বাবা অসীম প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। এখন শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়েছেন। মা রাখি গৃহবধূ। বাড়ির একমাত্র সন্তান অনিরুদ্ধ ক্যানসার বায়োফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করার জন্য গিয়েছেন ইজ়রায়েলে। তিন বছর হয়ে গিয়েছে ছেলে ওখানেই থাকেন। আগামী ৮ জুলাই ছেলের ২৭ বছরের জন্মদিন। গত বছর অনিরুদ্ধ বাড়ি এসেছিলেন পুজোর সময়। গত ৮ নভেম্বর মেদিনীপুর থেকে ইজ়রায়েলে ফিরে যান। এখনও গবেষণা শেষ হতে দু’বছর বাকি রয়েছে। এই অবস্থায় যখনই সাইরেন বাজে তখন সেফটি জ়োন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙ্কারে গিয়ে আশ্রয় নেন অনিরুদ্ধ ও তাঁর বন্ধুরা। তা-ই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এই পরিস্থিতিতে রোজকার জীবনে বিঘ্ন ঘটছে। খাবারেরও সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণে শুকনো খাবার মজুত করে রাখতে বলা হয়েছে।