‘পশ্চিমবঙ্গ দিবসে’ সুকান্তকে বাধা, শুভেন্দুকে কালো পতাকা
আনন্দবাজার | ২১ জুন ২০২৫
বিজেপির ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনকে কেন্দ্র করে এ বারও তুঙ্গে উঠল রাজনৈতিক চাপানউতোর। ভবানীপুরে শুক্রবার বিজেপির বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা এবং দুর্গাপুরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কালো পতাকা দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা ‘প্ররোচনা ছড়ানো’র অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
১৯৪৭-এর ২০ জুন বঙ্গীয় আইন পরিষদে (অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভা) পশ্চিমবঙ্গের ভারতভুক্তির পক্ষে ভোটাভুটির দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করে বিজেপি। সেই সূত্রেই রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা এ দিন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ি পর্যন্ত মোটরবাইক মিছিলের আয়োজন করেছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচি শুরুর আগেই পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সুকান্তের প্রশ্ন, “শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল করব বলেছিলাম। পুলিশ বলছে করা যাবে না। ভারতের পতাকা হাতে মিছিল করা যাবে না, এটা বলার সাহস হয় কী করে পুলিশের? এরা বাংলাদেশ, না কি পাকিস্তানের পুলিশ!”
শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ার পরে, তাঁর নেতৃত্বে প্রতি বছর বিধানসভাতেও বিজেপির পরিষদীয় দল দিনটি পালন করে। এ দিনও তা উপলক্ষে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে বিধানসভার গেট থেকে মিছিল করে গিয়ে রেড রোডে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভার ভিতরেও শ্যামাপ্রসাদকের ছবিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁরা। পরে আসানসোলে পশ্চিমবঙ্গ দিবসের মিছিলে যাওয়ার পথে দুর্গাপুরে শুভেন্দুকে তৃণমূল কালো পতাকা দেখায় বলে অভিযোগ। শুভেন্দুর বক্তব্য, “ভালই বোঝা যাচ্ছে যন্ত্রণার নাম শুভেন্দু অধিকারী। ’২১-এ মমতাকে হারিয়েছি। ’২৬-এর ভোটেও হারাব।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব বরাবরই এই দিবসটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালনের বিরোধিতা করে এসেছেন। পক্ষান্তরে, পয়লা বৈশাখকে ‘বাংলা দিবস’ হিসেবে পালন করে রাজ্য সরকার। সেই সূত্র ধরেই দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিজেপি নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেছেন, “কেউ যদি মনে করেন ভুল দিনে, ভুল তারিখে প্ররোচনা ছড়ানোর জন্য মিছিল করবেন, সে ক্ষেত্রে পুলিশ যা ভাল বুঝেছে, করেছে।”
এর মধ্যেই রাজ্য বিজেপি দিনটি পালনে যথেষ্ট উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ তুলেছেন উদ্বাস্তু আন্দোলনের নেতা মোহিত রায়। তাঁর দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় না-থেকে সন্তোষপুর, বাঘাযতীন, যাদবপুর, মুকুন্দপুর, ঠাকুরপুকুর, পালবাজার, মালঞ্চ, করুণাময়ী এলাকার বিজেপি কর্মীরা দিনটি উদ্যাপন করছেন।