• হাওড়ার নিখোঁজ বিস্কুট কোম্পানির ম্যানেজারের দেহ উদ্ধার বোলপুরে, অপহরণের পর খুনের অভিযোগ...
    আজকাল | ২১ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বোলপুর থানার শিবতলা সংলগ্ন ফাঁকা মাঠ থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় শুক্রবার সকালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই যুবকের মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃতদেহটি পড়ে ছিল শিবতলা থেকে সুরুল যাওয়ার রাস্তার ধারে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে দেহটি দেখতে পান ও তৎক্ষণাৎ খবর দেন বোলপুর থানায়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পাঠায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, যুবককে অন্য কোথাও খুন করে এখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং তদন্ত শুরু করে।

    এদিকে, কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃতদেহের পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহটি শনাক্ত করেন অনিমেশ মিত্র নামে এক ব্যক্তির দেহ হিসেবে। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা ও হাওড়ার তেলকল ঘাট এলাকার একটি বিস্কুট কোম্পানির অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার ছিলেন।

    পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিমেশ মিত্র ২০১৯ সাল থেকে ওই কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। প্রতি দু’দিন অন্তর ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যেতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টেয় শিবপুরের এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে অফিস থেকে বের হন। কিন্তু তারপর আর তিনি অফিসে ফেরেননি, এমনকি ব্যাঙ্কেও টাকা জমা হয়নি।

    পরিবার যখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়, তখন তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হাওড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।

    তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে দেখতে পায়, অনিমেশ মিত্রকে জোর করে একটি বাইকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাইকচালকের মাথায় হেলমেট ছিল, ফলে তার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। জানা গিয়েছে, আভানি মলের কাছে শেষবার দেখা গিয়েছিল অনিমেশ বাবুকে। সেখান থেকেই সম্ভবত অপহরণ করা হয়।

    এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তবে ধৃত ব্যক্তি অনিমেশবাবুর পরিচিত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সহকর্মীরাও জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার পরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

    পুলিশ এখন খুন, অপহরণ ও ষড়যন্ত্র—এই তিন দিক ধরেই তদন্ত চালাচ্ছে। অনিমেশ মিত্রের ব্যাঙ্ক লেনদেন, কল রেকর্ডস ও অফিসের অভ্যন্তরীণ তথ্য ঘেঁটে হত্যার পিছনে সম্ভাব্য আর্থিক কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সিআইডিকেও যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে সূত্রের খবর।

    এই ঘটনায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বোলপুর এবং হাওড়া—উভয় এলাকাতেই। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সহকর্মী—সকলেই অনিমেশ মিত্রের মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ।
  • Link to this news (আজকাল)