• ট্রেলারের সঙ্গে বরযাত্রী গাড়ির ধাক্কা পুরুলিয়ায় মৃত ঝাড়খণ্ডের ৯
    বর্তমান | ২১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: বিয়েবাড়ির আনন্দ মুহূর্তে বদলে গেল বিষাদে! শুক্রবার সাত সকালে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ন’জন বরযাত্রীর। ঘটনাস্থল পুরুলিয়া-জামশেদপুর ১৮ নম্বর জাতীয় সড়কের বলরামপুর। স্থানীয় নামশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিক কাছেই একটি স্পঞ্জ আয়রন বোঝাই ট্রেলারের সঙ্গে বরযাত্রীদের বলোরো গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুমড়ে মুচড়ে যায় গাড়িটি। চালক সহ ন’জনযাত্রীকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা সবাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ট্রেলারটিও পাল্টি খেয়ে যায় রাস্তার পাশে। চালক পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস। প্রচণ্ড গতিতে থাকা ট্রেলার ও গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই দুর্ঘটনা বলে পুলিসের প্রাথমিক ধারণা। 

    ঘটনাস্থলে পৌঁছে জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেই ঝাড়খণ্ডের নিমডি থানা এলাকার বাসিন্দা। কী কারণে এই দুর্ঘটনা,তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের বলা হয়েছে। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে যত দ্রুত সম্ভব নমুনা সংগ্রহ করবেন। মেকানিক্যাল পরীক্ষাও করা হবে। সেই সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন চন্দ্রমোহন মাহাত(৫০), অজয় মাহাত(৪২), বিজয় মাহাত(৪৮), কৃষ্ণপদ মাহাত(৩৬), বৃহস্পতি মাহাত(৪৫), স্বপনকুমার মাহাত(২৭), গুরুপদ মাহাত(৩১) এবং শশাঙ্ক শেখার মাহাত(৩০)। এঁদের মধ্যে চন্দ্রমোহনের বাড়ি আধারডি এবং গাড়ির চালক চিত্তরঞ্জনের বাড়িমুরুতে। বাকি সাতজনই লকড়ি গ্রামের বাসিন্দা। মৃতদের মধ্যে অজয় এবং বিজয় দুই ভাই।

    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার আদাবনা গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী হিসেবে এসেছিলেন এই ন’জন। সকলেই বরের বন্ধু-বান্ধব বলে জানা গিয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া সেরে ঝাড়খণ্ডের পথে রওনা দিয়েছিলেন।  বলরামপুরের ওই প্রাথমিক স্কুলের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়িটি। পুলিস জানিয়েছে,স্পঞ্জ আয়রন বোঝই ট্রলারটি টাটা থেকে পুরুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে, বরযাত্রী বোঝাই গাড়িটি বলরামপুর হয়ে নিমডির দিকে যাচ্ছিল। ২০ কিলোমিটার পথ গেলেই ঝাড়খণ্ডের নিমডি। কিন্তু, বাড়ি ফেরার আগেই সবশেষ!

    দুর্ঘটনা ঘটার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা চলে আসেন। তাঁরাই প্রথমে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। কিছু পরে আসে বলরামপুর থানার পুলিস। চলে আসেন জেলা পুলিসসুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গাড়িটি থেকে সবাইকে মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বাঁশগড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পুরুলিয়া দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে পাঠানো হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)