• নকল সোনা বন্দক দিয়ে একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে তিন কোটি টাকা ঋণ! তারকেশ্বরে গ্রেপ্তার ৪
    প্রতিদিন | ২১ জুন ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: ব্যাঙ্কে সোনা বন্দক দিয়ে কোটি কোটি টাকা ঋণ। পরে জানা যায়, বন্দক রাখা সব সোনাই নকল! একাধিক ব্যাঙ্কের সঙ্গে এমন প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তদন্তে নেমে গ্রেপ্তার করল চারজনকে। ঘটনাটি, হুগলির তারকেশ্বর থানা এলাকার। জানা গিয়েছে, মোট চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তিন কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছিল। একটি চক্র চালানো হচ্ছিল বলে পুলিশ অনুমান করছে। আর কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত? তাঁর খোঁজ চলছে।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তারকেশ্বরের শাখা থেকে সোনা বন্দক নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সেই সোনা আদপে নকল! অভিযোগ, ব্যাঙ্কের নিযুক্ত স্বর্ণকার ও এক লোন এজেন্ট কারসাজি করে ওই ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। এরপর আরও একাধিক ব্যাঙ্কের তরফে ওই একই রকম অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে দেখা যায়, এভাবে মোট তিন কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।

    এরপরই বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানতে পারে, একটি চক্র এক্ষেত্রে কাজ করছে। তদন্তে উঠে আসে, কারা ঋণ নেবেন, সেই তালিকা প্রথমে তৈরি হত। কোথা থেকে ঋণ নেওয়া হবে, সেই ব্যাঙ্ক ঠিক করা হত। তারপরই সেই ব্যাঙ্কের স্বর্ণকার ও লোন এজেন্টেদের সঙ্গে রফা করা হত। রফা ঠিক হয়ে গেলে নকল সোনা জমা দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া হত। আগে থেকে সব ঠিক থাকায় ঋণ পেতে কোনও সমস্যাও হত না। সেই হিসেবে মোট চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তিন কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া হয়। টাকা হাতে এসে গেলেই সেসব নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়া হত।

    পুলিশ তদন্তে নেমে ধর্মরাজ মালিক, সঞ্জয় সাউ, সৌম্যদীপ্ত লোহার এবং শুভঙ্কর পাত্র নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বাড়ি তারকেশ্বর থানা এলাকাতেই। তাঁদের নামেই ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল বলে খবর। যদিও ঘটনা জানাজানির পর থেকে পলাতক লোন এজেন্ট ও ব্যাঙ্ক নিযুক্ত স্বর্ণকাররা। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নকল সোনা কোথা থেকে আনা হত? কোথায় সেসব তৈরি হত? আর কারা এই চক্রে জড়িত আছেন? সেসব বিষয় পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ব্যাঙ্কগুলির আর কোন কর্মী এই ঘটনায় জড়িয়ে আছেন? তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ধৃতদের চন্দননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও জেরা হবে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)