• রজতশুভ্রর বাড়িতে যাওয়ার পথে পুলিশের সঙ্গে তুলকালাম সুকান্তর, অমিত শাহের হস্তক্ষেপ দাবি
    এই সময় | ২১ জুন ২০২৫
  • কেলগ-কাণ্ডে তুলকালাম কলকাতার রাজপথে। শুক্রবার, ২০ জুন বিকেলে চিকিৎসক রজতশুভ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই রজতশুভ্রকেই নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। অভিযোগ, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের নথিতে তিনি এমবিবিএস হলেও 'অ্যানাস্থেটিস্ট' হিসাবে অতিরিক্ত কোয়ালিফিকেশনের কোনও তথ্য সেখানে নথিভুক্ত করা নেই। অথচ ইংল্যান্ডে তিনি অ্যানাস্থেটিস্ট হিসাবে কাজ করছেন।

    এ দিন বিকেলে ভবানীপুরের রাস্তা থেকে সুকান্ত এবং রজতশুভ্রকে আটক করে ভবানীপুর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, দু’জনকেই লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রজতশুভ্রকে ছাড়া হলেও সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে পোদ্দার কোর্টের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা।

    লন্ডনের কেলগ কলেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে প্রতিবাদী পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন NRI চিকিৎসক রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। রজতশুভ্রকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল নোটিস পাঠিয়েছে, এই খবর প্রকাশ্য়ে আসার পর এ দিন বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কালীঘাটের বাড়িতে রওনা দেন সুকান্ত। কিন্তু ভবানীপুরেই তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ, এমনই অভিযোগ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের।

    জানা গিয়েছে, সুকান্তকে আটকে দেওয়ার খবর পান চিকিৎসক রজতশুভ্র। তিনি নিজেই বেরিয়ে সুকান্তর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তখনই তুলকালাম বাঁধে বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মীদের দাবি, সুকান্তর সঙ্গে রজতশুভ্র কথা বলা শুরু করতেই পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে। দু’জনকেই লালবাজারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ রজতশুভ্রকে লালবাজার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। রজতশুভ্র বলেন, ‘এমন হেনস্থার শিকার কোনওদিন হইনি। পুলিশকে এর জবাব দিতে হবে।’ তাঁর আরও দাবি, কেলগ কলেজে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলাতেই তাঁকে এই এ ভাবে করা হচ্ছে। সুকান্তকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে লালবাজার থেকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার সময় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন প্রবাসী ভারতীয়দের কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন চিকিৎসক রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। 'অ্যানেস্থেটিস্ট' রজতশুভ্রকে নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। তিনি ব্রিটেনে অ্যানেস্থেটিস্ট হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ জমা পড়েছে, যা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল (আইএমসি)-এর ২৬ এবং ২৮ নম্বর ধারার লঙ্ঘন। 'অ্যাডিশনাল কোয়ালিফিকেশন' থাকলে তা ২৬ নম্বর ধারায় নথিভুক্ত করতে হয়। আর ২৮ নম্বর ধারায় জানাতে হয় 'চেঞ্জ অফ প্লেস অফ প্র্যাকটিস'-এর বিষয়টি। অক্সফোর্ড-পর্বে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের অন্যতম মুখ ছিলেন রজতশুভ্র। আরজি কর আন্দোলন নিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে চিৎকার করছিলেন তিনি। এ বার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেল সুকান্তর নামও।

    সুকান্তর গ্রেপ্তারি নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কথা মেনে চলাই নাগরিকের প্রাথমিক কর্তব্য। কিন্তু বিজেপি নেতারা তা মানেন না। এটা ওদের মাথায় রাখা উচিত। কেন্দ্রীয় নেতা হোক বা রাজ্য নেতা সবাইকেই আইনশৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।

    পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। ১৯ তারিখ ডায়মন্ড হারবরে এবং ২০ তারিখ ভবানীপুরে তাঁকে কী অবস্থায় পড়তে হয়েছে, তা বিশদে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এই বিষয়ে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন।

  • Link to this news (এই সময়)