‘টাকা খেয়ে অপরাধীদের আড়াল করছেন’, কেষ্ট-হুমকির পর আর এক আইসি কাজল-ঘনিষ্ঠের নিশানায়
আনন্দবাজার | ২০ জুন ২০২৫
আবার বীরভূম তৃণমূল নেতৃত্বের নিশানায় থানার আইসি। অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) বোলপুর থানার আইসি-র বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছিলেন। ফোন করে ‘অনুযোগ’ করেছিলেন, তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের নির্দেশে কাজ করেন।
এ বার কাজল-অনুগামী বলে পরিচিত এক তৃণমূল নেতার অভিযোগ, সিউড়ি থানার আইসি-র সঙ্গে অপরাধীদের যোগসাজশ রয়েছে। তাঁকে বোমা-গুলি মজুতের আগাম খবর দেওয়া হলেও তিনি নিষ্ক্রিয় থাকেন। কয়েক জন পুলিশকর্মীর সঙ্গে মিলে অপরাধীদের আড়াল করছেন এবং বীরভূম জেলায় অশান্তিতে পরোক্ষে সাহায্য করছেন। শুধু তা-ই নয়, কাজল-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা নরুল ইসলামের অভিযোগ, সিউড়ি থানার আইসি কাজ করছেন বীরভূমের (অনুব্রত) নির্দেশে!
কয়েক দিন আগে বোলপুর থানার আইসিকে অনুব্রতের হমকি-ফোন ঘিরে শোরগোল পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। পুলিশকর্মীর সঙ্গে কথোপকথনের অডিয়ো ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পরে মামলা হয়েছে বীরভূমের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতার বিরুদ্ধে। অনুব্রত স্বীকার করে নিয়েছেন ওই কণ্ঠ তাঁর। তিনি পুলিশ-সহ সমস্ত মহলের কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু তার আগে বোলপুর থানার আইসি-র বিরুদ্ধে প্রায় যে যে অভিযোগ অনুব্রত করেছিলেন, প্রায় সেই একই অভিযোগ করছেন তৃণমূলের সিউড়ি-২ ব্লকের সভাপতি নুরুল ইসলাম। তাঁর নিশানায় সিউড়ি থানার আইসি। এ বার নুরুলের দাবি, ওই আইসি ‘বোলপুরের নির্দেশে’ কাজ করছেন।
অভিযোগের সূত্রপাত একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা থেকে। সিউড়ি-২ ব্লকের দমদমা গ্রামে অনুব্রতের অনুগামী শেখ হীরার বাড়ির পিছনে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। তৃণমূলের একাংশেরই দাবি, ওই বোমা ফাটিয়েছেন কাজল-অনুগামীরা। সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে সিউড়ি থানার আইসি-কে আক্রমণ করেন নুরুল। তিনি বলেন, ‘‘এই আইসি-র চোখের সামনেই এলাকায় বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র মজুত হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সিউড়ি-২ ব্লককে অশান্ত করার জন্য বোলপুরের নির্দেশে বকুল নামে একটি ছেলে জায়গায় জায়গায় বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছে। ওঁকে গ্রেফতার করলেই সিউড়ি-২ ব্লক শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু সিউড়ি থানার আইসি তা করবেন না। তাঁকে বার বার বলেও লাভ হয়নি। বোলপুরের নির্দেশে (বোলপুর তৃণমূল নেতৃত্ব, যেখানে এখনও সর্বেসর্বা অনুব্রত) বকুলকে মদত দিচ্ছেন উনি।’’ এর পর তৃণমূল নেতা চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, ‘‘আমি জায়গা বলে দেব। পুলিশ অভিযান চালালে সেখানেই বোমা উদ্ধার হবে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।’’ তাঁর অভিযোগ, ওই আইসি এবং বেশ কয়েক জন পুলিশ আধিকারিক, পুলিশকর্মীর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগসাজশ রয়েছে। রয়েছে টাকা-পয়সারও লেনদেনও।
তৃণমূল নেতার এই অভিযোগ প্রসঙ্গে অনুব্রত কিংবা জেলা পুলিশ, কেউ এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।