বিধানসভার রেকর্ড থেকে বক্তব্য বাতিল, শুক্রেও বিজেপির ‘অসৌজন্য’, উত্তপ্ত অধিবেশন
প্রতিদিন | ২০ জুন ২০২৫
গৌতম ব্রহ্ম: বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও বিধানসভা অধিবেশনে ‘অসৌজন্য’ আচরণ বিজেপির! যার জেরে এদিনও বিধানসভার রেকর্ড থেকে বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য মুছে (একপাঞ্জ) করার সিদ্ধান্ত নিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপি পরিষদীয় দলের নেতা শংকর ঘোষ-সহ একাধিক বিধায়ক কক্ষত্যাগ করেন। বিধানসভার বাইরে মুখে কালো মাস্ক পরে বসেন বিক্ষোভে। তাঁদের হাতে পোস্টার, লেখা ? ‘চুপ বিধানসভা চলছে!’ যদিও বিরোধীরা বেরিয়ে গেলেও শাসকদলের সকলে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এদিনের ঘটনায় ফের স্পষ্ট হল, বৃহস্পতিবার বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ যাওয়ার বিষয়টিকে মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সেল ট্যাক্স সংক্রান্ত আলোচনা চলাকালীন নিজেদের বক্তব্য রেখেই অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। শাসকপক্ষকে জবাব দেওয়ার সময়ও দেননি। এই আচরণ ‘অসংসদীয়’, ‘অসৌজন্য’ বলে স্পিকারের কাছে তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড থেকে মুছে ফেলার আবেদন জানান মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা। স্পিকার নিজেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়ে দেন বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য।
এরপর শুক্রবার যখন রাজ্যে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, তখন প্রথমেই বক্তব্য রাখতে ওঠেন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। তিনি বক্তব্য শুরু করতেই শাসকদলের বিধায়করা বৃহস্পতিবারের ঘটনার রেশ ধরে হইচই করতে শুরু করেন। শংকর ঘোষ বলেন, ”কোনওভাবেই শাসকদলের বিধায়করা এভাবে ডিক্টেট (নির্দেশ) করতে পারেন না যে বিধায়ক হিসেবে তিনি বা তার দল কী করবে।” হইচই তাতে আরো বৃদ্ধি পায়। অধ্যক্ষ জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিরোধী দল যে ভূমিকা পালন করেছে তার জন্যই ক্ষুব্ধ শাসকদলের বিধায়করা। সেখান থেকেই এই ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা।
শংকর ঘোষের উদ্দেশে স্পিকার আরও বলেন, ”আজও আপনাদের বলছি, চলে যাবেন না। শংকরবাবু, আপনি কথা দিন যে সব বিধায়কদের নিয়ে থাকবেন। বেরিয়ে যাবেন না।” তাতে কোনও জবাব না দিয়ে হইহট্টগোলের মধ্যেই শংকরবাবু বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। এরপরই অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত নেন যে শঙ্কর ঘোষের কোনও বক্তব্যই রেকর্ডে যাবে না। পরিস্থিতি তাতে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বক্তব্য মাঝপথে থামিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন শংকর ঘোষ-সহ বিরোধী দলের বিধায়করা। এরপর তাঁরা সেখান থেকে বেরিয়ে বিধানসভার সিঁড়িতে মুখে কালো মাস্ক পরে অবস্থানে বসেন। তাঁদের হাতে ছিল ব্যানার যেখানে লেখা ছিল, “চুপ বিধানসভা চলছে!’