চম্পক দত্ত: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ,শিলাবতী ও কেঠিয়া নদীর একাধিক বাঁধ ভেঙে প্লাবিত একাধিক গ্রাম,জলবন্দি বাসিন্দারা।জলের তলায় বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি।চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে শিলাবতী ও কেঠিয়া নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে,নদীর পাড় উপচে জল ঢুকেছে গ্রামে।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষকিরা,শির্ষা,ধরমপোতা,চৈতন্যপুর,পরমানন্দপুর,নিত্যানন্দপুর,চাষীবাড় সহ ৮-১০ টি গ্রাম প্লাবিত।ঘোষকিরা,চৈতন্যপুর,ধরমপোতা ও রাতে লাহিরগঞ্জে কেঠিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত এইসমস্ত গ্রাম,জল ঢুকেছে শিলাবতীরও।দুই নদীর মধ্যবর্তী হওয়ায় ভগবন্তপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮-১০ টি গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,জল ঢুকেছে একতলা বাড়ির উঠান ও ভিতরেও।যাদের বাড়ি ঘরের পরিস্থিতি খারাপ সেইসব পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে এনে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে।গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে তাদের সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতে জলের তলায় বিঘার পর বিঘা জমির ফসল,চরম ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা।অপরদিকে ভগবন্তপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪ টি গ্রাম প্লাবিত,জলবন্দি বাসিন্দারা।এই গ্রাম পঞ্চায়েতে গদাধরপুর,কমরপুর সহ বেশকয়েকটি জায়গায় শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।জলবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে বেশকিছু পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে,তাদের খাওয়াদাওয়া সবরকম ব্যবস্থা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে করা হয়েছে বলে জানান গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান।এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতির খোঁজ নেওয়া এবং জলবন্দি বাসিন্দাদের আহ্বান করা হয়েছে তারা চাইলে নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে পারে তারজন্য ব্লক প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েত সমস্ত ব্যবস্থা করেছে।
প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনাজুর মোল্লার।ব্লকের নদীতীরবর্তী অপর গ্রাম পঞ্চায়েত বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতেরও ১২-১৫ টি গ্রাম প্লাবিত,জল ঢুকেছে বসতবাড়িতে।একে গ্রামের সাথে অপর গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ব্লকের এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের।পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন,বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ শিবির ও পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চন্দ্রকোনায় নদীর জলস্তর বেড়ে পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে,বেলা গড়াতেই একের পর এক নদী বাঁধ ভাঙতে শুরু করে,রাতে নতুন করে ভগবন্তপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের লাহিরগঞ্জে কেঠিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রাম জল ঢুকতে শুরু করে,গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গ্রামবাসীদের সাথে নিয়ে বাঁধ মেরামতে তদারকি করেন।নদীগুলির জলস্তর বাড়তে থাকায় চন্দ্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লক ছাড়াও চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকেরও বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জল ঢুকছে বলে খবর।
পাশাপাশি ঘাটালের শিলাবতী নদীতে জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে, জল বাড়ছে হু হু করে, ঘাটালের ব্রিটিশ আমলের তৈরি ভাসাপোলের উপর দিয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, এই পোলের উপর দিয়েই প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করত। ভাসাপোল রক্ষা করতে চরম তৎপরতা ঘাটাল পৌর কর্তৃপক্ষের। ভাষা পোলের উপর দিয়ে সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বন্ধ। অন্যদিকে ঘাটাল মহকুমাতে বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে প্রশাসনের জানালেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস। চন্দ্রকোনার পর এবার ঘাটালে শহর অর্থাৎ পৌর এলাকার নিচু ওয়ার্ডগুলিতে জল ঢোকার শুরু হওয়ার পাশাপাশি ঘাটাল ব্লকের বন্যাপ্রবণ গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে নদীর জল ঢোকা শুরু হয়েছে।