বিধান সরকার: প্রতারণার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি হত সোনার গয়না। সেই গয়না বন্দক দিয়ে কোটি কোটি টাকার গোল্ড লোন জালিয়াতি চলছিল! পর্দা ফাঁস করলো তারকেশ্বর থানার পুলিস। গ্রেফতার গোল্ড লোন জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত চার প্রতারক। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তারকেশ্বর শাখা থেকে তারকেশ্বর থানায় প্রথম একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় যে নকল সোনা ব্যাংকে জমা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা লোন তোলেন একাধিক ব্যক্তি।
আরও অভিযোগ ওই ব্যাংকের গোল্ড ভ্যালুয়ার ও এক লোন এজেন্টের কারসাজিতে নকল সোনা বন্ধক রেখে লোন করানো হত। এরপর আরও কয়েকটি ব্যাংক থেকে একই অভিযোগ জমা পরে থানায়। মোট চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারী ব্যাংক থেকে নেওয়া লোনের পরিমান প্রায় তিন কোটি টাকার উপর। মোট পাঁচটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
তদন্তে নেমে একের পর এক জট খুলতে শুরু করে তারকেশ্বর থানার পুলিস। লোন প্রাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নকল সোনা দিয়ে ঋণ নেওয়ার রহস্য ভেদ করে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, প্রথমে কারা লোন নেবে তাদের একটি দল গঠন করা হত। এরপর তাদের সঙ্গে রফা করত এক লোন এজেন্ট ও ব্যাংকের ভ্যালুয়ার। লোন এজেন্টের কাজ ছিল সোনার গয়না বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার আবেদন করা। ভ্যালুয়ারের কাজ ছিল নকল সোনা বা কম সোনাকে বেশি সোনা হিসাবে সার্টিফিকেট দেওয়া।
এরপর লোন মঞ্জুর হলেই নিজেদের মধ্যে হত ভাগ বাটরা হত। তারকেশ্বরের একাধিক ব্যংকে এতদিন এইভাবেই চলছিল জালিয়াতি। অবশেষে জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধৃতরা হল ধর্মরাজ মালিক, সঞ্জয় সাউ, সৌম্যদীপ্ত লোহার, শুভঙ্কর পাত্র। এদের বাড়ি তারকেশ্বর থানা এলাকায়। যাদের বিরুদ্ধে ষাট লক্ষ টাকার লোন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
লোন নেওয়ার পর গহনা ছাড়িয়ে নেওয়া বা ইএমআই দেওয়া কোনওটাই করত না প্রতারকরা। এতেই সন্দেহ হয় ব্যাংকের। পুলিসি হেফাজতে চেয়ে শুক্রবার তাদের চন্দননগর মহকুমা আদালতে পাঠায় পুলিস। তবে গোল্ড লোন জালিয়াতির সঙ্গে আর যারা যুক্ত তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস। পুলিসের সন্দেহ শুধু মাত্র লোন নেওয়ার জন্য গয়না তৈরি করা হয়। যে বিশেষ ধরনের গহনার মধ্যে বেশির ভাগই বালা বা চুরি। যার ভিতরে পাতলা পাত ঢুকিয়ে উপরে সোনার আস্তরন দিয়ে দেওয়া হত।