গঙ্গায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, নৌকা চুরি করে পালাতে গিয়ে মাঝি-সহ তলিয়ে গেলেন ১৪ জন...
আজকাল | ২০ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর যাওয়ার সময় গঙ্গা নদীবক্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় উল্টে গেল মাছ ধরার একটি নৌকা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান কলাবাগান ঘাট এবং মালদা জেলার পারলালপুর ঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায়।
সূত্রের খবর, নৌকা উল্টে নদী বক্ষে মাঝি সহ প্রায় ১৪ জন যাত্রী পড়ে যান। তাদের সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫) নামে বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ এলাকার এক বাসিন্দার খোঁজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডুবুরিরা তাঁর সন্ধানে নদীবক্ষে তল্লাশি চালাচ্ছে।
সামশেরগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে ,বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১ টা নাগাদ বাঁকুড়া জেলা থেকে কিছু পরিযায়ী শ্রমিক কাজ শেষে নিজেদের বাড়ি মালদা জেলায় ফিরে যাচ্ছিলেন। গভীর রাতে তাঁরা যখন মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার ফেরিঘাটে এসে পৌঁছন সেই সময় রাত হয়ে যাওয়ার কারণে প্রশাসনের নির্দেশে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শ্রমিকদের মালদা জেলায় যাওয়ার তাড়া থাকার জন্য স্থানীয় কিছু মৎস্যজীবীদের সঙ্গে চুক্তি করে তাঁরা বেশি টাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে মাছ ধরার ছোট একটি নৌকা করে মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর থানার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জানা গিয়েছে, মাঝ রাত নাগাদ নৌকাটি যখন মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর থানার পারলালপুর ঘাটের কাছাকাছি ছিল সেই সময় নদীর স্রোত, প্রচন্ড হওয়া এবং বেশি যাত্রী থাকার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
রঞ্জন মন্ডল নামে এক মাঝি বলেন ,'গতকাল রাতে আমার নৌকা কলাবাগান সংলগ্ন ফেরিঘাটে বাঁধা ছিল। রাতের অন্ধকারে দু'জন মৎসজীবি সেই নৌকাটি চুরি করে মালদার শ্রমিকদের ঘাট পারাপার করে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু মাঝ নদীতে গিয়ে আমার নৌকা ডুবে গিয়ে বেশ কয়েকজন তলিয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। শুক্রবার সকালে অন্য একটি ঘাটে আমার নৌকা খুঁজে পেয়েছি। ইতিমধ্যে গোটা বিষয়টি সামশেরগঞ্জ থানায় জানানো হয়েছে।"ঘটনার খবর পাওয়ার পরই বৃহস্পতিবার রাতেই বৈষ্ণবনগর এবং সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ এবং বিএসএফ এলাকায় পৌঁছায়। তারাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করে। সূত্রের খবর ৮০০ টাকার বিনিময়ে মালদা জেলার ১২ জন শ্রমিক মাছ ধরার নৌকাটি ভাড়া করেছিলেন। ছোট্ট নৌকাটিতে ২ জন মাঝি সমেত মোট ১৪ জন যাত্রী ছিলেন।
অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে বেআইনিভাবে প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া মাছ ধরার নৌকা নিয়ে যাত্রী পারাপার করানোর অভিযোগে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার বাসিন্দা দুই মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।