• ‘আমাকে বাঁচান স্যর’, কাতর কাতর আর্জি ফোন নাবালিকার
    এই সময় | ২০ জুন ২০২৫
  • এই সময়, হরিহরপাড়া: পুলিশ: ‘হ্যালো, কে বলছেন?’

    নাবালিকা: ‘স্যর আমাকে বাঁচান। আমি পড়তে চাই। আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বাবা বিয়ে দিয়েছে। আমাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে যান। এখানে থাকলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।’

    ওই ফোন পেয়ে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার আইসি অরূপ রায় বুধবার রাতে তাকে উদ্ধার করেন। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাবালিকার বাবা ও স্বামীকে। হরিহরপাড়া থানা এলাকার ঘটনা।

    এই থানার আইসি বলেন, ‘নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে দু’টি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। বাবার বিরুদ্ধে নাবালিকা বিবাহ রোধ আইনে একটি। অন্য মামলাটি নাবালিকার সঙ্গে সহবাস করার অভিযোগে পকসো আইনে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।’

    পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ধৃত দু’জনকে বৃহস্পতিবার বহরমপুরে জেলা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য ওই নাবালিকাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নাবালিকা এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। পরীক্ষার ফলপ্রকাশের দিন, মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া থানা অঞ্চলের এক টোটোচালকের সঙ্গে জোর করে তার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।

    এখন-ই বিয়ে না দেওয়ার জন্য বাবা-মা থেকে আত্মীয়-পরিজন, সকলের কাছে নাবালিকা কাতর আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু তার কথায় কেউ আমল দেয়নি। উল্টে তড়িঘড়ি বন্দোবস্ত করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।

    বিয়ের পরে স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে ওই নাবালিকা অভিযোগ করেছে। শেষ পর্যন্ত তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশকে ফোন করতে বাধ্য হয় সে। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে আইসি দ্রুত পদক্ষেপ করে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

    নাবালিকা জানায়, ফলপ্রকাশের দিন বিয়ে হওয়ায় সে রেজ়াল্ট জানতে পারিনি। পরে স্কুল থেকে মার্কশিট আনতে যেতে নিষেধ করা হয় শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে। স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা বললেই মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নাবালিকা।

    পড়াশোনা করার জন্য শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসার কথা নিজের বাবাকে জানালে তিনিও মারধর করেন বলে দাবি করেছে সে। তখন বাধ্য হয়ে সে পুলিশকে জানিয়েছে। এই ঘটনায় আইসি অরূপ বলেন, ‘মেয়েটির পড়াশোনার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সাহায্য করব। আমরা তার পাশে সবসময়ে থাকব।’

  • Link to this news (এই সময়)