• বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে ফের খালি হাতে ফিরল পুরসভা
    আনন্দবাজার | ২০ জুন ২০২৫
  • পুরনো রোগ। কিন্তু দাওয়াই নেই! বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে তাই আবারও ফিরতে হল কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মী ও পুলিশকে। পুরসভা সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কে সি সেন স্ট্রিটে একটি সাততলা বাড়ি ভাঙতে যান বিল্ডিং দফতরের কর্মীরা। সঙ্গে ছিল পুলিশও। অভিযোগ, সাততলা বাড়ির পুরোটাই বেআইনি দখলদারদের অধীনে চলে গিয়েছে। বিকেল চারটে পর্যন্ত পুরকর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকলেও দখলদারেরা নড়েননি। ফলে ফিরে আসতে হয় পুরসভা ও পুলিশকে।

    বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে গত এক বছরে বার বার এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে পুরসভা ও পুলিশ। অথচ, কে সি সেন স্ট্রিটের সাততলা বাড়ির দখলদারদের সরাতে পুরসভা আগেই পুলিশকে জানিয়েছিল। তা হলে কি পুরসভা ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে? কেনই বা বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে প্রায় প্রতি ক্ষেত্রে দেখা যায়, তা দখলে চলে গিয়েছে? বিল্ডিং দফতরের আশঙ্কা, বেআইনি বাড়ি ভাঙার খবর মালিকদের আগাম জানিয়ে দেন দফতরের কর্মীদের একাংশই। আগেও একাধিক বার পুরপ্রতিনিধিদের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বেআইনি বাড়ি ভাঙা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘টাকা খান পুলিশ ও বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। দোষ হয় পুরপ্রতিনিধিদের।’’

    প্রশ্ন, খোদ মেয়র ওই দফতরের দায়িত্বে। তা হলে কি বেআইনি বাড়ি ভাঙতে ব্যর্থ মেয়রের নেতৃত্বাধীন বিল্ডিং দফতর? মেয়র বলেন, ‘‘বেআইনি বাড়ি তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা না ভাঙলে লোক ঢুকে যায়। কে সি সেন স্ট্রিটের ক্ষেত্রে আমাদের যাওয়ার আগেই লোক ঢুকে গিয়েছে।’’

    মাস দেড়েক আগে টালিগঞ্জের গোবিন্দ ব্যানার্জি লেনে বহুতল ভাঙতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল পুরকর্মীদের। মাস সাতেক আগে দেশপ্রাণ শাসমল রোডেও বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যাওয়ায় মহিলা পুর ইঞ্জিনিয়ারকে বন্দুক দেখিয়ে শাসানোর অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময়েই বেহালায় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যাওয়ায় পুরকর্মীদের আটকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল মেরে ফেলার। গত নভেম্বরে সিঁথির বি টি রোডে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে শিশু কোলে এক মহিলা স্টোভ জ্বালিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।

    বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিকের প্রশ্ন, ‘‘বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে দখলদারের সমস্যায় ভুগতে হয়। পুলিশ কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকে।’’ এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের যু্গ্ম নগরপাল মিরাজ খালিদকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি, এসএমএসেরও উত্তর দেননি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)