• মূর্তি বসানোর আগে জানাতে হবে সব তথ্য, কড়া পুর নির্দেশিকা
    আনন্দবাজার | ২০ জুন ২০২৫
  • কলকাতা পুরসভার অধীন কোনও পার্ক, রাস্তার ধারে আইল্যান্ড, ফুটপাত বা উন্মুক্ত চত্বরে এখন থেকে আর ‘ইচ্ছে’ মতো মূর্তি বা স্মৃতিফলক বসানো যাবে না। মূর্তি বসানোর আগে কড়া নজরদারিতে যাচাই হবে প্রস্তাবিত ব্যক্তির পরিচয়, জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ, নির্মাণ সামগ্রী, মূর্তির আকার, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচের উৎস। শুধু তা-ই নয়, মূর্তি বানাবেন কে এবং সেটি প্লাস্টার অব প্যারিস, ফাইবার না ব্রোঞ্জের— সেই তথ্যও পুরসভাকে জানাতে হবে।

    গত এপ্রিলে মেয়র পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও নিয়মনীতি গত ৮ এপ্রিল ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় প্রকাশিত হয়েছিল। পুর কমিশনারের তরফে জারি হওয়া সার্কুলারে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, মূর্তি বসাতে আগে আবেদন করতে হবে মেয়র, পুর কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার এবং পুরসচিবের কাছে। আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে প্রস্তাবিত জায়গার নকশা, রাস্তার নাম, এলাকা ও জায়গার পরিমাণ-সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ।

    তবে শুধু আবেদনের কাগজ জমা দিলেই চলবে না। মূর্তি স্থাপনের জন্য দিতে হবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যাঁর মূর্তি বসানো হবে তাঁর নাম, জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ-সহ সংক্ষিপ্ত জীবনী, মূর্তিটি নির্মাণ করবেন কোন শিল্পী, সেটি আবক্ষ না পূর্ণাবয়ব, নির্মাণে ব্যবহৃত উপাদান (পিওপি, ফাইবার না ব্রোঞ্জ), নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কোথা থেকে আসবে— সবই বাধ্যতামূলক ভাবে জানাতে হবে।

    সঙ্গে জমা দিতে হবে একটি হলফনামা। সেখানে থাকবে প্রতি বছর জন্মদিন অথবা মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, সারা বছর মূর্তির রক্ষণাবেক্ষণ এবং কোনও কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মেরামতির দায় নেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি।

    এই সমস্ত নথি জমা পড়ার পরে পুরসভার পক্ষ থেকে গঠিত যৌথ পরিদর্শক দল খতিয়ে দেখবে, প্রস্তাবিত স্থানে আদৌ মূর্তি বসানো সম্ভব কিনা। পাশাপাশি, সেখানে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফর্মার, জলের ভূগর্ভস্থ পাইপ বা অন্য কোনও পরিষেবার লাইন রয়েছে কিনা, মূর্তি বসালে পথচারী বা যান চলাচলে অসুবিধা হবে কিনা— সে সবই বিশ্লেষণ করা হবে সরেজমিনে।

    পরিদর্শনের প্রতিবেদন জমা পড়লে তা মেয়র পরিষদের বৈঠকে উঠবে। সেখানেই চূড়ান্ত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অনুমোদন পেলে নির্দিষ্ট শর্ত মেনে তবেই বসানো যাবে মূর্তি।

    পার্কের মধ্যে মূর্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে কাজের তত্ত্বাবধানে থাকবেন পার্ক বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার। অন্যত্র নজরদারিতে থাকবেন সংশ্লিষ্ট বরোর ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভেয়ার। আর সব শেষে, মূর্তি বসানো এবং তার অনুমতি সংক্রান্ত ফি নির্ধারণ হবে মেয়র পরিষদের বিবেচনায়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)