তিন বছর পর ফের ১০০ দিনের কাজ শুরু হতে চলেছে। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের এ সংক্রান্ত রায় সামনে আসার পরে খুশির হাওয়া দরিদ্র পরিবারগুলিতে। খুশি জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানও। তাঁরা জানান, নির্দেশ কার্যকর হলে এলাকার মানুষ কাজ পাবেন।
দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ ২১-২২ অর্থবর্ষের পরে ১০০ দিনের কাজে আর কোনও টাকা বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। বুধবারের রায়ে কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে, আগামী পয়লা অগস্ট থেকে পশ্চিমবঙ্গে আবার ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে। তবে এজন্য যে কোনও শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র। দুর্নীতি আটকাতে পদক্ষেপ করতে পারবে। কিন্তু কাজ আটকে রাখা যাবে না।
তার পরেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে জবকার্ডধারীদের থেকে। সিউড়ি ১ ব্লকের লতাবুনি গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মী টুডু বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে এলাকার উন্নতির পাশাপাশি হাতে টাকা আসত। আমাদের আর্থিক অবস্থা শুধরেছিল। গ্রামের ১০০টি বাড়ির মধ্যে অন্তত ৭৫ টি বাড়ির খড়ের ছাউনি বদলে টিন দিয়েছিলাম। ফের কাজ শুরু হলে ভাল হবে।’’
খবর শুনে খুশি খয়রাশোলের লাউবেড়িয়া গ্রামের জবকার্ডধারী নির্মল বাউড়ি, কালোনি দাস। উভয়েই জানান, ১০০-দিনের কাজ বন্ধের ফলে খুব কষ্টে আছি। আবার শুরু হলে খুব উপকার হবে।
জেলার একাধিক প্রধান জানিয়েছেন, একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বছরে গড়ে দু’কোটি টাকার কাজ হত। পঞ্চায়েতে এলাকায় সম্পদ সৃষ্টি হত। সেটা তো তিন বছর পুরোপুরি বন্ধ। আদালতের রায়ে মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।
জেলা এমজিএনআরইজিএ সেল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ জবকার্ড রয়েছে। একটি পরিবার থেকে গড়ে দু’জন কাজ করলে সংখ্যাটা হয় ৯ লক্ষ হয়। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কেন্দ্র বছরে দেড় থেকে দু কোটি কর্মদিবস অনুমোদন দিয়ে থাকে। ২১-২২ অর্থবর্ষে দেড় কোটি কর্মদিবস সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র। তার আগের অর্থবর্ষগুলিতে কর্মদিবসের সংখ্যা দু’কোটি ছিল। সিউড়ি ১ ব্লকের মতো ছোট ব্লকেও বছরে সাত লক্ষ কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘বীরভূমের মতো কৃষিনির্ভর জেলায় আয়ের আর অন্য কোনও বড় পথ খোলা নেই। আদালতের রায়কে স্বাগত।’’ জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু গরিবদের বঞ্চনা করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া নয়, বকেয়াও দেয়নি সরকার। রাজ্য নিজেই টাকা দিয়েছে। কাজ শুরু হলে মানুষ উপকৃত হবেন।’’
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রব সাহা বলেন, ‘‘দুর্নীতি হয়েছে বলে টাকা বন্ধ ছিল। আদালতের রায়কে স্বাগত। তবে দেশের চৌকিদার আছেন। অন্যায় হতে দেবেন না।’’