এই সময়, মালদা: নতুন করে বিয়ে করেছে স্বামী। ভিনরাজ্যে কাজ করার সময়ে এই খবর পেয়েই ছ’মাসের পুত্রসন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে এসে ধর্নায় বসলেন স্ত্রী। যদিও বাড়িতে স্বামী না থাকায় ওই তরুণীকে ঢুকতে দেননি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলে অভিযোগ।
এরপরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্বশুরবাড়ির সামনে চট পেতে কোলের শিশুকে নিয়ে ধর্নায় বসেন গুজরাটের তরুণী সুমি খাতুন (২৫)।
বৃষ্টির কারণে শ্বশুরবাড়ির সামনে একটি টিনের শেড দেওয়া ফাঁকা জায়গায় তাঁকে বসার ব্যবস্থা করে দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ঘটনাটি চাঁচল থানার মকদমপুর গ্রামে।
সুমির অভিযোগ, তিনি তাঁর স্বামী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে গুজরাটেই দিনমজুরির কাজ করতেন। তিন মাস আগে স্বামী বাড়ি যাচ্ছি বলে তাঁকে গুজরাটেই রেখে আসেন। এরপরে তিনি জানতে পারেন, স্বামী গ্রামে গিয়ে ফের বিয়ে করেছেন।
এরপরই স্ত্রীর মর্যাদা দাবিতে ধর্নায় বসেন ওই তরুণী। এই ঘটনার পর স্থানীয় গ্রামবাসীরাও তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যদিও এই ঘটনায় সাদ্দামের পরিবার বাড়ির গেটে তালা মেরে গা ঢাকা দিয়েছেন।
চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সাদ্দাম দীর্ঘদিন ধরে গুজরাটে দিনমজুরি করেন।
আড়াই বছর আগে তাঁর সঙ্গে গুজরাটের বাসিন্দা সুমির সম্পর্ক তৈরি হয়। গুজরাটেই তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই সাদ্দাম স্ত্রীকে নিয়ে চাঁচলের গ্রামের বাড়িতে আসেন। এরপর তার সাদ্দাম গুজরাটে কাজ করতে চলে যান।
অভিযোগ, শ্বশুর বাড়ির লোকেদের অত্যাচারে সুমিও চাঁচল ছেড়ে গুজরাটে চলে যান। এ দিন ফের ফিরে আসেন। সাদ্দামের মা সেতারা বিবি বলেন, ‘বাড়ির বৌ তিন মাস ধরে বাইরে রয়েছে। এখন হঠাৎ করে সে আমাদের বাড়িতে ফিরে এসেছে। এতদিন কোথায় কী ভাবে থাকল কিছুই জানি না। তাই ওকে মেনে নিতে পারিনি।’
মকদমপুর এলাকার বাসিন্দা রহিম শেখ, মমতাজ বেগমদের বক্তব্য, ‘সুমিকে আমরা ভালো মতো চিনি। ও খুব ভালো মেয়ে।’
চাঁচল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অঞ্জনা সাহা বলেন, ‘কোনও মহিলার উপর শারীরিক অত্যাচার করাটা আইনগত অপরাধ। আমরা চাই ওই মহিলাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গ্রহণ করুন। না-হলে পুলিশকে জানানো হবে।’