• আমেদাবাদের জেরে ‘নজরে’ এয়ারপোর্ট লাগোয়া পাঁচ পুরসভার হাইরাইজ বিল্ডিং
    বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও বারাসত: আমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার জেরে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। বিমানবন্দর সংলগ্ন অংশে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনও বহুতল তৈরি করা যাবে না। বহুতলের সর্বোচ্চ মাপ কতটা হবে, সেটা এয়ারপোর্ট অথরিটি ঠিক করে দেবে। এই মর্মে বিমানবন্দরের চৌহদ্দিতে থাকা পুরসভাগুলির কাছে কড়া নির্দেশিকা পাঠাতে চলেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে পুরসভাগুলির সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও শুরু করে দিয়েছেন বিমানবন্দরের আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে কলকাতা বিমানবন্দরের একেবারে লাগোয়া মধ্যমগ্রাম, নিউ বারাকপুর ও বিধাননগর পুরসভার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। এই তালিকাতে রয়েছে দমদমের আরও তিন পুরসভাও। সেইসঙ্গে উচ্চ আলোকস্তম্ভ, হোর্ডিং, লাইট পোস্ট, সুউচ্চগাছ, জলের ট্যাঙ্ক, বাড়ির ছাদের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি হতে চলেছে। প্রতিটি জায়গাকে চিহ্নিত করে এবিষয়ে বিশেষ সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

    বিমান ওঠা ও নামা যাতে সুষ্ঠুভাবে হতে পারে, সেটাই ডাইরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশনের (ডিজিসিএ) মূল লক্ষ্য। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে নজরে এসেছে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে একাধিক বহুতল, হাই মাস্ট লাইট, বিদ্যুতের খুঁটি এবং ছাদের শেড। এগুলিকে কীভাবে সরানো যায়, তা নিয়ে আলোচনাশুরু হয়েছে। বুধবার মধ্যমগ্রাম পুরসভায় গিয়েছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের আধিকারিকদের একটি দল। একাধিক ছবি তুলে ধরে এয়ারপোর্ট অথরিটি দেখায়, কোথায় কী ধরনের সমস্যা হয়ে রয়েছে। সেগুলিকে দ্রুত সরানোর বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং নিউ বারাকপুর পুরসভার ১,২,৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এয়ারপোর্ট অথরিটির নজরে রয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে বিধাননগর পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডও। দিন কয়েকের মধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, পুরসভার যৌথ অভিযান শুরু হবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, আগে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নিতে হত। এখন সেই ছাড়পত্র নেওয়ার পরিধি বাড়ানোর পথেই হাঁটতে চলেছে ডিজিসিএ। মধ্যমগ্রাম পুরসভার পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ বলেন, আমরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বলেছি, যৌথ পরিদর্শন হোক। যেখানে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা সরিয়ে ফেলার বিষয়ে সদর্থক প্রচেষ্টা নেওয়া হবে।

    বস্তুত, আমেদাবাদের ঘটনার পর সর্বত্র আলোচনায় উঠে এসেছে বিমান ওঠা-নামার অংশটির সংলগ্ন এলাকা ফাঁকা থাকলে, বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। সেই সূত্রেই ডিজিসিএ বেশ কিছু কড়া নির্দেশিকা বলবৎ করতে চলেছে। সে ব্যাপারে একটি খসড়া তৈরি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এখানে কলকাতা বিমানবন্দর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় আরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত পাইলট সুমন্ত রায়চৌধুরি বলেন, কলকাতা বিমানবন্দরের আশপাশে যেভাবে বহুতল গজিয়ে উঠেছে, তা বড়সড় চিন্তার কারণ।
  • Link to this news (বর্তমান)