নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ রাখতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে বাড়তি জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো হাবড়া ১ ব্লকের রাউতারা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতি বুথে ক্ষুদ্রাকারে তৈরি করেছে এই প্রকল্প। তার ফলেই রাজ্যের মধ্যে ‘সেরা’র তকমা পেয়েছে এই পঞ্চায়েত। এতে একদিকে যেমন এলাকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকছে, পাশাপাশি পচনশীল বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবানও হচ্ছে ওই পঞ্চায়েত।
ঠিক হয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে এক থেকে দু’টি করে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প তৈরি করা হবে। শহর ঘেঁষা পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সংখ্যা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সেই মতো জেলার ২২টি ব্লকের ১৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই এই প্রকল্পের কাজ চলছে জোরকদমে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিশেষ নজির সৃষ্টি করেছে হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের রাউতারা গ্রাম পঞ্চায়েত। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ছোট আকারে এই প্রকল্প চালু করেছে পঞ্চায়েত। ২৬টি বুথে প্রায় সাড়ে আট হাজার পরিবার রয়েছে এখানে। এই প্রকল্পের জন্য মোট ৬৬টি ক্ষুদ্রাকার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের পিট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বাড়ি বাড়ি থেকে সংগৃহীত পচনশীল ও অপচনশীল আবর্জনাকে আলাদা করা হচ্ছে। পচনশীল আবর্জনা থেকে তৈরি হচ্ছে কম্পোস্ট সার। এর পোশাকি নাম ‘নির্মল’। আর অপচনশীল প্লাস্টিকজাতীয় আবর্জনা বিক্রি করা হয়। আর সেই প্লাস্টিক কাজে লাগছে রাস্তা তৈরিতেও।
আবর্জনা সংগ্রহ থেকে সার তৈরিতে পঞ্চায়েতের মোট ৫৬ জন কর্মী রয়েছেন। তাছাড়া সাতটি ই-কার্ট গাড়িও রয়েছে এই কাজে ব্যবহার করার জন্য। এনিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান কল্যাণ মজুমদার বলেন, সংগ্রহ করা আবর্জনা থেকে ৬৬টি জায়গাতেই তৈরি হচ্ছে কম্পোস্ট সার। এর ফলে একদিকে যেমন পঞ্চায়েতের আয় বাড়ছে, অন্যদিকে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা স্বনির্ভর হচ্ছেন। এজন্য আমরা রাজ্যে সেরা হয়েছি। ক’দিন আগেই আমাদের সেই শিরোপা তুলে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তরের পক্ষ থেকে। এনিয়ে হাবড়া ১-এর বিডিও সুবীর দণ্ডপাঠ বলেন, রাজ্যস্তরে আমাদের এই কাজের মডেল বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা বৃহৎ আকারে জমি নিয়ে এই প্রকল্প করছি না। ছোট ছোট ক্ষেত্র নিয়ে, বুথ ধরে ধরে এই প্রকল্পকে আমরা বাস্তবায়ন করেছি। বিশেষ করে আমরা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে পেরেছি পচনশীল এবং অপচনশীল আবর্জনাকে আলাদা করার কথা। আগামী দিনে আমাদের আরও কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এই কাজের সুপারভাইজার তাফিমা খাতুন বলেন, প্রতি মাসে আমাদের পঞ্চায়েত থেকে প্রায় এক টন কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। ১০ টাকা কেজি দরে এটা বিক্রি হয়। এই সারের গুণগতমানের প্রশংসা করেছেন কৃষক থেকে শুরু করে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরাও। - নিজস্ব চিত্র